পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংজ্ঞাপরিচয়
২৮৭

জয় কালি ভাল ভালি যত ঢালী গাজে।
সেই লম্ফ ভূমিকম্প জগঝম্প বাজে।
ডাকে ঠাট কাট কাট মালসাট মারে।
কম্পমান বর্ধমান বলবান্ ভারে।

এই প্রসঙ্গে দ্রষ্টব্য ‘ধরিত্রীর চক্ষুনীর’ ইত্যাদি দৃষ্টান্তের আলোচনা (পৃ ২৬১)।

 মালা (পৃ ১৫৭-৫৮)— যথাস্থানে পাদটীকায় এ ছন্দের পরিচয় দেওয়া হয়েছে।

 মালিনী (পৃ ১৩৩)—এই সুবিদিত সংস্কৃত ছন্দটির প্রতিপংক্তিতে থাকে পনরটি বর্ণ বা অক্ষর। আট বর্ণের পরে অর্ধযতি এবং বাকি সাত বর্ণের পরে পূর্ণযতি। প্রথম ভাগে শেষ দুটি বর্ণ গুরু, দ্বিতীয় ভাগে দ্বিতীয় ও পঞ্চম বাদে বাকি সব বর্ণ ই গুরু। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, মালিনী ছন্দ আসলে মন্দাক্রান্তারই রকমফের মাত্র। মালিনীর প্রথমাংশ এবং মন্দাক্রান্তার দ্বিতীয়াংশ প্রায় একরূপ; পার্থক্য এই যে, মন্দাক্রান্তার দ্বিতীয়াংশে পাঁচটি লঘুর পরে একটি গুরু কিন্তু মালিনীর প্রথমাংশে ছয়টি লঘুর পরে দুটি গুরু। মালিনীর দ্বিতীয়াংশ এবং মন্দাক্রান্তার তৃতীয়াংশ অবিকল এক। দ্বিজেন্দ্রনাথের পূর্বোদ্ধৃত মন্দাক্রান্তা শ্লোকটিকে মালিনীতে রূপান্তরিত করলেই এই দুই ছন্দের পার্থক্য ও সাদৃশ্য বোঝা সহজ হবে।—

রহ যদি তুমি, টঙ্কা,| না রহে কোন জ্বালা।
কি করিব শিখি’ বিদ্যা, | খালি ভস্মে ঘি ঢালা।
তব দরশন-ইচ্ছা, | কিন্তু-পাথেয় নাস্তি-।
চলিব কি, পদ বাঁধা, | একি দৈবের শাস্তি।

বলা বাহুল্য, ‘কোন’ ‘দরশন’ ‘পদ’ ‘দৈবের’ প্রভৃতি শব্দের শেষ বর্ণটির উচ্চারণ হবে অকারান্ত।