পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংজ্ঞাপরিচয়
২৮৯

পয়ার দ্বিপদী, তার অর্ধর্যতি একটি। ত্রিপদীতে অর্ধযতি দুটি (পৃ ১১৯)। যেমন

যেন ধীর | ধ্রুবতারা ||
কহে কথা | ভাষাহারা ||
জনহীন | সাঁঝে।

কাজেই অর্ধ যতিকে পদযতিও বলা যায়।

 পর্বযতি অপেক্ষাকৃত লঘু, সেজন্যে অনেক সময় পর্বযতির লোপ ঘটানো যায়। অর্থাৎ পর্বযতির নির্দিষ্ট স্থানে না থেমে একেবারে পদযতিতে এসে হাঁফ ছাড়া যায়। দৃষ্টান্ত এই (পৃ ৭০)।—

নিঃস্বতাসংxকোচে দিন || অবসন্ন | হলে।

এখানে প্রথম পর্বের শেষে ধ্বনিপ্রবাহ বিরত হয়নি, অর্থাৎ লঘুযতি লুপ্ত হয়েছে। অর্ধযতির লোপ সাধারণত ঘটে না। সেজন্যে ছন্দের পরিচয়ে অনেক ক্ষেত্রে পর্ববিভাগের কথা না বলে একেবারে পদবিভাগের কথাই উল্লেখ করা হয়। ছন্দের পদবিভাগ পর্ববিভাগের চেয়ে গুরুতর। কিন্তু পর্ববিভাগের কথা মনে না রাখলে ছন্দের সৌষম্যনির্ণয় সম্ভব নয়।

 পদের যেমন পর্ববিভাগ আছে, পর্বেরও তেমনি উপবিভাগ আছে। পর্বের এই উপবিভাগকেই বলা যায় উপপর্ব। লক্ষ্য করলে প্রত্যেক পর্বের মধ্যেই একটি বা দুটি করে ক্ষীণ যতির অস্তিত্ব অনুভব করা যায়। পর্বের অন্তস্থিত যতির চেয়েও তার মধ্যস্থিত যতি লঘুতর। লঘুতর যতিকে বলা যায় উপযতি। উপযতিই পর্বকে উপপর্বে বিভক্ত করে। উপপর্বের আয়তন দুই মাত্রার কম বা তিন মাত্রার বেশি হয় না। উপপর্বই ক্ষুদ্রতম ছন্দোবিভাগ। এইজন্যই রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, দুই এবং তিন মাত্রার বিভাগ হচ্ছে সকল ছন্দের মূল (পৃ ১৪২) বা রূঢ়িক উপাদান (পৃ ১২৫)। দুই মাত্রার বিভাগকে বলা হয়েছে সমমাত্রার