প্রথম এগার মাত্রাও আবার সাত-চার এই দুটি উপবিভাগে এবং নয় মাত্রা পাঁচ-চার উপবিভাগে বিভক্ত। তা ছাড়া, ভারতচন্দ্র দুএক স্থলে শিখরিণীর প্রথম ছয় অক্ষরকে দুই সমান ভাগে বিভক্ত করে তাতেও মিল দিয়েছেন। যথা—
দয়ালো ভূপাল- | দ্বিজকুমুদ জাল- | দ্বিজপতে। ...
কুবর্ণো গোকর্ণঃ | সবিষবদনো | বক্রগমনঃ।
বলা বাহুল্য এর মাত্রাবিভাগ সর্বাংশে পূর্বোদ্ধৃত দুই লাইনের অনুরূপ নয়।
দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বিলাতে পালাতে’ ইত্যাদি কৌতুকরচনাটি (পৃ ১২৩) প্রথম প্রকাশিত হয় ভারতী পত্রিকায় ১৮৭৯ সালে রবীন্দ্রনাথের পত্রধারার অন্তর্গত হয়ে। অতঃপর এটি রবীন্দ্রনাথের ‘য়ুরোপপ্রবাসীর পত্র’ নামক গ্রন্থে (১৮৮১) স্থান পায় (পঞ্চম পত্র, পৃ ১০৮)। উভয়ত্রই এটি রবীন্দ্রনাথের কোনো ‘মান্যবন্ধু’র রচনা বলে পরিচিত হয়েছে। কিন্তু সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাইপ্রবাস’ গ্রন্থ (১৯১৫) থেকে জানা যায় এই কৌতুককবিতাটি দ্বিজেন্দ্রনাথের রচনা। সত্যেন্দ্রনাথের গ্রন্থেও সমগ্র কবিতাটি উদ্ধৃত হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় তিন স্থলেই কয়েকটি লাইনে শিখরিণী ছন্দের বিধান রক্ষিত হয়নি। তার প্রথম দুই লাইনেই দুটি ভুল ছিল। যথা— গৌড়ে ও দৌড়ে। এই পাঠে শিখরিণীর বিধান লঙ্ঘিত হয়। ছন্দের ‘প্রকৃতি’ প্রবন্ধেও রবীন্দ্রনাথ ভুল পাঠই উদ্ধৃত করেছিলেন। বর্তমান সংস্করণে ছন্দের খাতিরে পাঠ ঠিক করে গউড়ে-দউড়ে মুদ্রিত হল।
দ্বিজেন্দ্রনাথ এই ব্যঙ্গকবিতাটি ভারতচন্দ্রের নাগাষ্টকংএর অনুসরণেই রচনা করেছিলেন, তাতে সন্দেহ নেই।[১] দ্বিজেন্দ্রনাথ ভারতচন্দ্রের
- ↑ দেশ, শারদীয় সংখ্যা ১৩৬১: ছন্দের খেলা: পৃ ২২৩-২৪ দ্রষ্টব্য।