২২ ছন্দ
নীরব হিয়া তব দিল ভারি কী যায়া-ন্বপনে যে, মরি মরি, মিষিড় কাননের মরমর বাদল নিশীখের ঝরঝর। এ ছন্দে আমার পাঠকেরা কিছু আপত্তি করিলেন না। তাই সাহস করিয়া এটেই এ ছন্দেই স্থরে গাহিলাম। তখন দেখি যারা কাব্যের বৈঠকে দিব্য খুশি ছিলেন তাঁরাই গানের বৈঠকে রক্তচক্ষু। তাঁরা বলেন, এ-ছন্দের এক অংশে সাত আর-এক অংশে চার, ইহাতে কিছুতেই তাল মেলে না। আমার জবাব এই, তাল যদি না মেলে সেটা তালেরই দোষ। ছন্দটাতে দোষ হয় নাই, কেন তাহা বলি। এই ছন্দ তিন এবং চার মাত্রার যোগে তৈরি । এইজন্যই "তোমার নীলবাসে” এই সাত মাক্সার পর “নিল কায়া” এই চারমাত্রা খাপ খাইল। তিন মাত্রা হইলেও ক্ষতি হইত না। যেমন, “তোমার নীলবাসে মিলিল।” কিন্তু ইহার মধ্ো ছয় মাত্র! কিছুতেই সইবে নী । যেমন, “তোমারি নীলবাসে থরিল শরীর |” অথচ প্রথম অংশে যদি ছয়ের ভাগ থাকিত তবে দিব্য চলিত। ঘেমন, “তোমার স্থুনীল বাসে ধরিল শরীর” । এ আমি বলিতেছি কানের স্বাভাবিক রুচির কথা । এই কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিবার পথ। অতএব এই কানের কাছে যদি ছাড় মেলে তবে ওন্তাদকে কেন ডরাইব? আমার দৃষ্টান্তগত ছন্দটিতে প্রত্যেক লাইনেই সবসুদ্ধ ১১ মাত্রা
আছে। কিন্ত এমন ছন্দ হইতে পারে যার প্রত্যেক লাইনে সমান মাত্রাবিভাগ নাই। যেমন-_-
বাজিষে, সখি, বাঁশি বাঁজিবে,
হৃদয়রাজ হদে রাজিবে।
বচন রাশি রাশি কোধ। যে যাবে ভাসি' অধরে লাজহামি লাজিবে।