পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৪৪
ছন্দ
৪৪

8৪ ছন্দ

এইরকম উপাদানের মাত্রাভাগ নিয়েই বস্তর প্রক্কতিভেদ ঘটে, রাসায়নিকের! বোধ করি এই কথা বলেন।

পয়ার ছন্দের বিশেষত্ব হচ্ছে এই যে, তাকে প্রায় গাঠে গাঠে ভাগ করা চলে, এবং প্রত্যেক ভাগেই মূল ছন্দের একটা আংশিক রূপ দেখ যায়। যথা--

ওহে পান্থ, চল পথে, পথে বন্ধু আছে একা বসে ব্লানমুখে। সেযে সঙ্গ যাচে।

“ওহে পান্থ, এইখানে একটা থামবার স্টেশন মেলে । তার পরে যথাক্রমে, “ওহে পান্থ চল”, “ওহে পান্থ চল পথে", 'ওহে পান্থ চল পথে পথে । তার পরে 'বন্ধু আছে”, এই ভগ্রাংশটার সঙ্গে পরের লাইন জোড়া যায়, যেমন-_ বন্ধু আছে একা, “বন্ধু আছে একা বসে”, বন্ধু আছে একা বসে সে যে'। কিন্তু তিনের ছন্দকে তার ভাগে ভাগে পাওয়া যায় না, এইজন্যে তিনের ছন্দে ইচ্ছামতো থামা চলে না । ষেমন-_ “নিশি দিল ডুব অরুণসাগরে”। “নিশি দিল+, এখানে থামা যায়, কিন্তু তাছলে তিনের ছন্দ ভেঙে যায়? “নিশি দিল ডুব” পর্যন্ত এসে ছয় মাত্রা পুরিয়ে দিয়ে তবেই তিনের ছন্দ হাফ ছাড়তে পারে। কিন্ত আবার, "নিশি দিল ডুব অরুণ এখানেও থামা যায় না; কেননা তিন এমন একটি মাত্রা যা আর একটা তিনকে পেলে তবে দাড়াতে পারে, নইলে টলে পড়তে চায়; এইজন্য 'অরুণসাগর'এর মাঝখানে থামতে গেলে রসনা কূল পায় না। তিনের ছন্দে গতির প্রাবল্যই বেশি, স্থিতি কম। সুতরাং তিনের ছন্দ চাঞ্চল্যপ্রকাশের পক্ষে ভালো কিন্তু তাতে গাজীর্ধ এবং প্রসার অল্প। তিনের মাত্রার ছন্দে অমিত্রাক্ষর রচনা করতে গেলে বিপদে পড়তে হয়, সে যেন চাকা নিয়ে লাঠিখেলার চেষ্টা। পয়ার আট পায়ে চলে বলে তাকে যে কত রকমে চালানো যায় “মেঘনাদবধণকাব্যে তার প্রমাণ আছে। তার অবতারণাটি পরখ করে