পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছন্দের হসন্ত হলন্ত
৫৯

এখনি আসিনু তার দ্বারে
অমনি ফিরিয়া চলিলাম,
চোখেও দেখিনি কভু তারে
কানেই শুনেছি তার নাম।

‘বৎসর’ ‘উৎসব’ প্রভৃতি শব্দ যদি তিনমাত্রার কোঠা পেরোতে গেলেই স্বভাবতই খুঁড়িয়ে পড়ত তাহলে তার স্বাভাবিক ওজন বাঁচিয়ে ছন্দ চালানো এতই দুঃসাধ্য হত না যে, ধ্বনিকে এড়িয়ে অক্ষরগণনার আশ্রয়ে শেষে মানবাঁচানো আবশ্যক হত। ওটা চলে বলেই চালানো হয়েছে, দায়ে পড়ে না। কেবল অক্ষর সাজিয়ে অচল রীতিকে ছন্দে চালানো যদি সম্ভব হত তাহলে খোকাবাবুকে কেবল লম্বা টুপি পরিয়ে দাদামশায় বলে চালানো অসাধ্য হত না।...

 বিচিত্রা—১৩৩৮ পৌষ

 দিলীপকুমার আশ্বিনের ‘উত্তরা’য়[১] ছন্দ সম্বন্ধে আমার দুই একটি চিঠির খণ্ড ছাপিয়েছেন। সর্বশেষে যে নোটটুকু দিয়েছেন তার থেকে বোঝা গেল আমি যে কথা বলতে চেয়েছি এখনো সেটা তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়নি।

 তিনি আমারই লেখার নজির তুলে দেখিয়েছেন যে, নিম্নলিখিত কবিতায় আমি ‘একেকটি’ শব্দটাকে চারমাত্রার ওজন দিয়েছি।

ইচ্ছা করে অবিরত আপনার মনোমত
গল্প লিখি একেকটি করে।

  1. উত্তরা—১৩৩৮ আশ্বিন: পত্রধারা।