এদিকে নীরেনবাবুর[১] রচনায়[২] “একটি কথা এতবার হয় কলুষিত” পদটিতে ‘একটি’ শব্দটাকে দুই মাত্রায় গণ্য করতে আপত্তি করিনি বলে তিনি দ্বিধা বোধ করছেন। তর্ক না করে দৃষ্টান্ত দেওয়া যাক।
একটি কথার লাগি তিনটি রজনী জাগি,
একটুও নাহি মেলে সাড়া।
সখীরা যখন জোটে মুখে তব বন্যা ছোটে,
গোলমালে তোলপাড় পাড়া।
‘একটি’ ‘তিনটি’ ‘একটু’ শব্দগুলি হসন্তমধ্য, ‘গোলমাল’ ‘তোলপাড়’ ও সেই জাতের। অথচ হসন্তে ধ্বনিলাঘবতার অভিযোগে ওদের মাত্রা জরিমানা দিতে হয়নি। তিনমাত্রা ও চারমাত্রার গৌরবেই রয়ে গেল। কেউ কেউ বলেন কেবলমাত্র অক্ষরগণনার দোহাই দিয়েই এরা মান বাঁচিয়েছে, অর্থাৎ যদি যুক্ত অক্ষরের ছাঁদে লেখা যেত তাহলেই ছন্দে ধ্বনির কমতি ধরা পড়ত। আমার বক্তব্য এই যে, চোখ দিয়ে ছন্দ পড়া আর বাইসিক্ল্-এর চাকা দিয়ে হামাগুড়ি দেওয়া একই কথা, ওটা হবার জো নেই। বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত দিলে কথাটা বোঝা যাবে।
টোট্কা এই মুষ্টিযোগ লট্কানের ছাল,
সিট্কে মুখ খাবি, জ্বর আট্কে যাবে কাল।
বলে রাখা ভালে। এটা ভিষক্-ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নয়, সাহিত্যডাক্তারের বানানো ছড়া, ছন্দ সম্বন্ধে মতসংশয় নিবারণের উদ্দেশে; এর থেকে অন্য কোনো রোগের প্রতিকার কেউ যেন আশা না করেন। আরো একটা
এক্টি কথা শুনিবারে তিন্টে রাত্রি মাটি,
এর পরে ঝগ্ড়া হবে, শেষে দাঁত কপাটি।