পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছন্দের হসন্ত হলন্ত
৬৩

ঠেসে ভরাতে কেউ ইচ্ছা করেন— দোহাই দিচ্ছি না করেন যেন—তবে এই রকম দাঁড়াবে।

বৃষ্টি পড়ছে টাপুর টুপুর নদেয় আসছে বন্যা,
শিবঠাকুরের বিয়ের বাসরে দান হবে তিন কন্যা।

রামপ্রসাদের একটি গান আছে।—

মা আমায় ঘুরাবি কত
চোখবাঁধা বলদের মতো।

এটাও তিনমাত্রা লয়ের ছন্দ।

মা-আ। মায় ঘু। রাবি-। কত-।

ফাঁক ভরাট করতে হলে হবে এই চেহারা।

হে মাতা আমারে ঘুরাবি কতই
চক্ষুবদ্ধ বৃষের মতোই।

যাঁরা অক্ষর গণনা করে নিয়ম বাঁধেন তাঁদের জানিয়ে রাখা ভালো যে, স্বরবর্ণে টান দিয়ে মিড় দেবার জন্যেই প্রাকৃত-বাংলা ছন্দে কবিরা বিনা দ্বিধায় ফাঁক রেখে দেন; সেই ফাঁকগুলো ছন্দেরই অঙ্গ, সে সব জায়গায় ধ্বনির রেশ কিছু কাজ করবার অবকাশ পায়।

হারিয়ে ফেলা বাঁশি আমার পালিয়েছিল বুঝি
লুকোচুরির ছলে।

এর মধ্যে প্রায় প্রত্যেক যতিতে ফাঁক আছে।

   
হারিয়ে ফেলা-। বাঁশি আমা-র। পালিয়েছিল। বুঝি—।
 
লুকোচুরি-র। ছলে-।

কিছু বৈচিত্র্যও দেখছি। প্রথম দুটি বিভাগে সমান্তরাল ফাঁক। কিন্তু ভাগে ফাঁক বাদ গিয়ে একেবারে চতুর্থ ভাগের শেষে দীর্ঘ ফাঁক পড়েছে। পাঠক ‘হারিয়ে ফেলা’র পরেও ফাঁক না দিয়ে একেবারে