পাতা:ছবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছবি ।

গোলাপের গন্ধে ভর্‌ভর করিতেছে। বুঝিলাম, পত্র-লেখক সামান্য ব্যক্তি ন’ন। খুব সম্ভব, তিনি স্বয়ংই জমীদার-পুত্র।

 শীতকালের রাত্রি সহজে যায় না। বেলা পাঁচটার পরই সন্ধ্যার আলোক প্রজ্জ্বলিত হইয়াছে। তাহার কিছু পরেই আমি পত্র পাইয়াছি। পত্রখানি এতবার পাঠ করিয়াছি, এতক্ষণ ধরিয়া পত্র-লেখকের নাম জানিবার জন্য চেষ্টা করিয়াছি, কিন্তু তখনও সাতটা বাজিল না।

 পত্রখানি সম্মুখে রাখিয়া, একখানি আরাম চৌকিতে উপবেশন করিয়া, নানাপ্রকার চিন্তায় নিমগ্ন আছি, এমন সময়ে আমার গৃহদ্বারে করাঘাতের শব্দ শুনিতে পাইলাম।

 হাতের শব্দ শুনিয়াই বুঝিতে পারিলাম, আমার বন্ধু বলাই ডাক্তার আসিয়াছেন। দরজা বন্ধ ছিল, কিন্তু হুড়কো দেওয়া ছিল না। আমি চৌকী হইতে না উঠিয়াই বলিলাম, “ভিতরে এস ডাক্তার। আমার এখানে ত মেয়ে-ছেলে নাই যে, তোমার আসিতে ভয় হইবে?”

 ডাক্তারকে আর কিছু বলিতে হইল না। তিনি হাসিতে হাসিতে গৃহমধ্যে প্রবেশ করিলেন, এবং আমার নিকটস্থ একখানি চেয়ারে বসিয়া পড়িলেন।

 আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “কেমন আছ ডাক্তার? এদিকে আর এস না কেন?”

 ডা। তুমিই যত নষ্টের মূল।

 আ। সে কি! আমার অপরাধ কি?

 ডা। তোমার কথাতেই বিবাহ করি। এখন আমায় ঘোর সংসারী হতে হয়েছে।