পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8२ শিলাইদহ বৃহস্পতিবার। ৯ জানুয়ারি ১৮৯২ তুই-এক দিন থেকে এখানকার প্রকৃতি শীত এবং বসন্তের মধ্যে ইতস্তত করছে। সকালে হয়তো উত্তরে বাতাসে জলে স্থলে হী হী ধরিয়ে দিয়ে গেল, সন্ধ্যাবেলায় শুক্লপক্ষের জ্যোৎস্নায় দক্ষিনে বাতাসে চারি দিক হু হু করে উঠল। বসন্ত অনেকট এসে পৌচেছে, বেশ বোঝা যাচ্ছে । অনেক দিন পরে আজকাল ও পারের বাগান থেকে একটা পাপিয়া ডাকতে আরম্ভ করেছে। মানুষের মনটাও কতকটা বিচলিত হয়ে উঠছে। আজকাল সন্ধ্যা হলে ও পারের গ্রাম থেকে গান-বাজনার শবদ শুনতে পাওয়া যায় । এর থেকে বোঝা যাচ্ছে, লোকে দরজা জানলা বন্ধ করে মুড়িমুড়ি দিয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বার জন্যে তেমন উৎসুক নয়। আজ পূর্ণিমারাত। ঠিক আমার বা দিকের খোলা জানলার উপরেই একটা মস্ত চাদ উঠে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে ; বোধ হয় দেখছে, আমি চিঠিতে তার সম্বন্ধে কোনো নিন্দে করছি কিনা। সে হয়তো মনে করে, তার জ্যোৎস্নার চেয়ে তার কলঙ্কের কথা নিয়েই পৃথিবীর লোকে বেশি কানাকানি করে। নিস্তব্ধ চরে একটা টিটি পাখি ডাকছে, নদী স্থির, নৌকো নেই, জলের উপর স্থির ছায়া ফেলে ও পারের ঘনীভূত বন স্তম্ভিত হয়ে রয়েছে— ঘুমন্ত চোখ খোলা থাকলে যেমন দেখতে হয়, এই প্রকাণ্ড পুর্ণিমার আকাশ সেইরকম ঈষৎ ঝাপসা দেখাচ্ছে। কাল সন্ধ্যা থেকে আবার ক্রমে ক্রমে অন্ধকারের সূত্রপাত হবে। কাল কাছারি সেরে এই ছোটো নদীটি পার হবার সময় দেখতে পাব, আমার সঙ্গে আমার এই প্রবাসের প্রণয়িনীর একটুখানি বিচ্ছেদ হয়েছে ; কাল যে আমার কাছে У e &