পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আনন্দ হয়, হাজার গদ্য লিখলেও তেমন হয় না কেন তাই ভাবছি। কবিতায় মনের ভাব বেশ একটি সম্পূর্ণতা লাভ করে ; বেশ যেন হাতে ক’রে তুলে নেবার মতো। আর, গদ্য যেন এক-বস্তা আলগা জিনিস— একটি জায়গা ধরলে সমস্তটি অমনি স্বচ্ছন্দে উঠে আসে না; একেবারে একটা বোঝা বিশেষ। রোজ রোজ যদি একটি ক’রে কবিতা লিখে শেষ করতে পারি তা হলে জীবনটা বেশ একরকম আনন্দে কেটে যায়। কিন্তু এত দিন ধরে সাধনা করে আসছি, ও জিনিসটা এখনও তেমন পোষ মানে নি। প্রতিদিন লাগাম পরাতে দেবে তেমন পক্ষীরাজ ঘোড়াটি নয়। আর্টের একটা প্রধান আনন্দ হচ্ছে স্বাধীনতার আনন্দ—বেশ আপনাকে অনেক দূরে নিয়ে যাওয়া যায় ; তার পরে আবার এই ভবকারাগারের মধ্যে ফিরে এসেও অনেক ক্ষণ কানের মধ্যে একটা ঝংকার, মনের মধ্যে একটা স্ফর্তি লেগে থাকে। এই ছোটো ছোটো কবিতাগুলো আপনা-আপনি এসে পড়ছে ব’লে আর নাটকে হাত দিতে পারছি নে। নইলে হটো-তিনটে ভাবী নাটকের উমেদার মাঝে মাঝে দরজা ঠেলাঠেলি করছে। শীতকাল ছাড়া বোধ হয় সেগুলোতে হাত দেওয়া হয়ে উঠবে না। চিত্রাঙ্গদা ছাড়া আমার আর সব নাটকই শীতকালে লেখা । সে সময়ে গীতিকাব্যের আবেগ অনেকটা ঠাণ্ডা হয়ে আসে ; অনেকটা ধীরে সুস্থে নাটক লেখা যায়। S X (t