পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(t ) थिजोहेलठ् সোমবার। ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৮৯২ এসব শিষ্টাচার আর ভালো লাগে না, আজকাল প্রায় বসে বসে আওড়াই ইহার চেয়ে হতেম যদি আরব বেঙ্কুয়িন’। বেশ একটা সুস্থ সবল উন্মুক্ত অসভ্যতা। ইচ্ছা করে, দিনরাত্রি বিচার-আচার বিবেক-বুদ্ধি নিয়ে কতকগুলো বহুকেলে জীর্ণতার মধ্যে শরীর-মনকে অকালে জরাগ্রস্ত না ক’রে, একটা দ্বিধাহীন চিন্তাহীন প্রাণ নিয়ে খুব একটা প্রবল জীবনের আনন্দ লাভ করি। মনের সমস্ত বাসনা ভাবনা, ভালোই হোক, মন্দই হোক, বেশ অসংশয় অসংকোচ এবং প্রশস্ত যেন হয়— প্রথার সঙ্গে বুদ্ধির, বুদ্ধির সঙ্গে ইচ্ছার, ইচ্ছার সঙ্গে কাজের কোনোরকম অহৰ্নিশি খিটিমিটি না ঘটে। একবার যদি এই রুদ্ধ জীবনকে খুব উদাম উচ্ছ,স্থল ভাবে ছাড়া দিতে পারতুম, একেবারে দিগ বিদিকে ঢেউ খেলিয়ে ঝড় বইয়ে দিতুম, একটা বলিষ্ঠ বুনো ঘোড়ার মতে কেবল আপনার লঘুত্বের আনন্দআবেগে ছুটে যেতুম ! কিন্তু আমি বেদুইন নই, বাঙালি। আমি কোণে বসে বসে খুৎ খুৎ করব, বিচার করব, তর্ক করব, মনটাকে নিয়ে একবার ওলটাব, একবার পালটাব— যেমন করে মাছ ভাজে, ফুটন্ত তেলে একবার এ পিঠ চিড় বিড় ক’রে উঠবে, একবার ও পিঠ চিড় বিড় করবে— যাক গে, যখন রীতিমত অসভ্য হওয়া অসাধ্য তখন রীতিমত সভ্য হবার চেষ্টা করাই সংগত। সভ্যতা এবং বর্বরতার মধ্যে লড়াই বাধাবার দরকার নেই। Y S ^