পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©Ꮼ গোয়ালন্দের পথে २* खून $w२२ আজ সমস্ত দিন নদীর উপরে ভেসে চলেছি। আশ্চর্য এই বোধ হচ্ছে যে, কতবার এই রাস্তা দিয়ে গেছি, এই বোটে চড়ে জলে জলে বেড়িয়েছি, এবং নদীর দুই তীরের মাঝখান দিয়ে ভেসে যাবার যে একটা বিশেষ আনন্দ আছে সে উপভোগ করেছি— কিন্তু দিনতুই ডাঙায় বসে থাকলে সেটা ঠিকটা আর মনে থাকে না। এই-যে একলাটি চুপ করে বসে চেয়ে থাকা— দুই ধারে গ্রাম ঘাট শস্তক্ষেত্র চর বিচিত্র ছবি, দেখা দিচ্ছে এবং চলে যাচ্ছে ; আকাশে মেঘ ভাসছে এবং সন্ধের সময় নানারকম রঙ ফুটছে ; নেীকো চলেছে, জেলেরা মাছ ধরছে, অহৰ্নিশি জলের একপ্রকার আদরপরিপূর্ণ তরল শব্দ শোনা যাচ্ছে ; সন্ধেবেলায় বিস্তৃত জলরাশি শ্রান্ত নিদ্রিত শিশুর মতো একেবারে স্থির হয়ে যাচ্ছে এবং উন্মুক্ত আকাশের সমস্ত তারা মাথার উপরে জেগে চেয়ে আছে ; গভীর রাত্রে যেদিন ঘুম নেই সেদিন উঠে বসে দেখি, অন্ধকারাচ্ছন্ন দুই কূল নিদ্রিত, মাঝে মাঝে কেবল গ্রামের বনে শৃগাল ডাকছে এবং পদ্মার নীরব খরস্রোতে ঝুপ্ৰাপ্‌ ক’রে পাড় খসে খসে পড়ছে— এই-সমস্ত পরিবর্তনশীল ছবি যেমন যেমন চোখে পড়তে থাকে অমনি মনের ভিতরে একটা কল্পনার স্রোত বইতে থাকে এবং তার দুই পারে তটশ্বের মতো নব নব আকাঙ্ক্ষার চিত্র দেখা দিতে থাকে। হয়তো সম্মুখের দৃশুটা খুব একটা চমৎকার কিছু নয়— একটা হলদে রকমের তৃণতরুশূন্ত বালির চর ধু ধূ করছে, তারই গায়ে একটা জনশূন্ত নেীকে বাধা রয়েছে এবং আকাশের ছায়ায় ফিকে নীলবর্ণ নদী বয়ে চলে যাচ্ছে — দেখে মনের ভিতরে কিরকম করে বলতে পারি নে। বোধ হয় છે ૨૭