পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৫৯

সাজাদপুর

সোমবার। ২৭ জুন ১৮৯২

 কাল বিকেলের দিকে এমনি ক’রে এল, আমার ভয় হল। এমনতরো রাগী চেহারার মেঘ আমি কখনও দেখেছি ব’লে মনে হয় না। গাঢ় নীল মেঘ দিগন্তের কাছে একেবারে থাকে থাকে ফুলে উঠেছে, একটা প্রকাণ্ড হিংস্র দৈত্যের রোষস্ফীত গোঁফ-জোড়াটার মতো। এই ঘন নীলের ঠিক পাশেই দিগন্তের সব শেষে ছিন্ন মেঘের ভিতর থেকে একটা টক্‌টকে রক্তবর্ণ আভা বেরোচ্ছে—একটা আকাশব্যাপী প্রকাগু অলৌকিক ’বাইসন’ মোষ যেন খেপে উঠে রাঙা চোখ দুটো পাকিয়ে ঘাড়ের নীল কেশরগুলো ফুলিয়ে বক্র ভাবে মাথাটা নিচু ক’রে দাঁড়িয়েছে; এখনই পৃথিবীকে শৃঙ্গাঘাত করতে আরম্ভ ক’রে দেবে—এবং এই আসন্ন সংকটের সময় পৃথিবীর সমস্ত শস্যখেত এবং গাছের পাতা হী হী করছে, জলের উপরিভাগ শিউরে শিউরে উঠছে, কাকগুলো অশান্ত ভাবে উড়ে উড়ে কী কী ক’রে ডাকছে।

১৩১