পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>bbbr আপনার চিঠি এইমাত্র পেলুম, বেলা দশটা বেজে গেছে। বাহিরে অসহ উত্তাপ, আমাদের ঘরের সমস্ত জানালা দরজা বন্ধ— অন্ধকার— মাথার উপরে পাখা আনাগোনা করছে ; আর্দ্র খসখস্ ভেদ ক’রে প্রচণ্ড পশ্চিমপবন শীতল ভাবে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করছে। ঘরের মধ্যে একরকম আছি ভালো। সেই পুরাতন ডেস্কের উপর ঝুকে পড়ে চিঠি লিখতে প্রবৃত্ত হয়েছি — আপনার ফুলজানি আমি পূর্বেই ভারতীতে পড়েছি এবং পড়েই আপনাকে একটা চিঠি লিখব মনে করেছিলুম। তার পরে ভাবলুম, আপনি একেই তো চিঠির উত্তর বহু বিলম্বে দেন, তার পর যদি বিনা উত্তরেই চিঠি লিখি তবে আপনাকে অত্যন্ত আশকার দেওয়া হয়। এরকম ব্যবহার পেলে বন্ধুদের স্বভাব খারাপ হয়ে যায়। তাই নিবৃত্ত হলুম। আপনার লেখা আমার ভারি ভালো লাগে। ওর মধ্যে কোনোরকম নভেলি মিথ্যা ছায়া নেই। আর এমন একটি ছবি মনে এনে দেয় যা আমাদের দেশের কোনো লেখকের লেখাতে দেয় না। আপনি কোনোরকম ঐতিহাসিক বা ঔপদেশিক বিড়ম্বনায় যাবেন না– সরল মানবহৃদয়ের মধ্যে যে গভীরতা আছে এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সুখদুঃখপূর্ণ মানবের দৈনন্দিন জীবনের যে চিরানন্দময় ইতিহাস তাই আপনি দেখাবেন । শীতল ছায়া, অামকাঠালের বন, পুকুরের পাড়, কোকিলের ডাক, শান্তিময় প্রভাত এবং সন্ধ্য,এরই মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে,তরল কলধ্বনি তুলে, বিরহমিলন হাসিকান্না নিয়ে যে মানবজীবনস্রোত অবিশ্রান্ত প্রবাহিত হচ্ছে তাই আপনি আপনার ছবির মধ্যে আনবেন। প্রকৃতির শাস্তির মধ্যে, স্নিগ্ধচ্ছায়া শু্যামল নীড়ের মধ্যে যেসব ছোটো ছোটো হৃদয়ের Σ &