না ক’রে যেন একটা খবর দিয়ে যাবার মতো সমস্তটা ব’লে গেল তা দেখলে এই ব্যাপারটার যথার্থ গভীরতা বুঝতে পারা যায়। এদের উপর যে আমার কতখানি শ্রদ্ধা হয়, আপনার চেয়ে যে এদের কতখানি ভালো মনে হয়, তা এরা জানে না। কিন্তু, তবু প্যারিসের সভ্যতা থেকে কত তফাত। সে এর চেয়ে কত কঠিন, কত উজ্জ্বল, কত সুগঠিত। তবু এখানকার মানুষের মধ্যে যে জিনিসটি আছে সে বড়ো অনাদরের নয়। যতক্ষণ না সভ্যতার মাঝখানে এই স্বচ্ছ সরলতার প্রতিষ্ঠা হয় ততক্ষণ সভ্যতা কখনোই সম্পূর্ণ এবং সুন্দর হবে না। সরলতাই মানুষের স্বাস্থ্যের একমাত্র উপায়—সে যেন গঙ্গার মতো, তার মধ্যে স্নান ক’রে সংসারের অনেক তাপ দূর হয়ে যায়। আর, য়ুরোপ সমস্ত তাপকে যেন লালন করে তুলছে এবং তার উপরে আবার সহস্রবিধ মাদকতার কৃত্রিম উত্তাপে আপনাকে রাত্রিদিন উত্তেজিত করে তুলছে। খবরের কাগজের যে-কটি টুকরো এসেছে প্রত্যেকটিতেই এই প্রমাণ দেয়।
পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১৯৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৬