পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

なb" পতিসর ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৪ মাঝে মাঝে মেঘ করছে, মাঝে মাঝে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, থেকে থেকে হঠাৎ হুহু ক’রে একটা হাওয়া এসে আমার বোটের গ্রন্থিতে গ্রন্থিতে বিচিত্র র্ক্যা-র্কোঃ শব্দে আর্তনাদ তুলছে— অাজ দুপুর বেলাটা এমনি ভাবে চলছে। এখন বেলা একটা বেজেছে। পাড়াগেয়ে মধ্যাহ্নের এই হাসের ডাক, কাপড় কাচার শব্দ, নৌকো-চল জলের ছলছল ধ্বনি, দূরে গোরুর পাল পার করবার হৈহৈ রব এবং আপনার মনের ভিতরকার একটা উদাস আলস্যপূর্ণ স্বগত সংগীতস্বর, কলকাতার চৌকিটেবিল-সমাকীর্ণ বর্ণ বৈচিত্র্যবিহীন নিত্যনৈমিত্তিকতার মধ্যে কল্পনাও করতে পারি নে। কলকাতাটা বড়ো ভদ্র এবং বড়ো ভারী, গবর্মেন্টের আপিসের মতো। জীবনের প্রত্যেক দিনটাই যেন একই আকারে একই ছাপ নিয়ে টাকশাল থেকে তক্তকে হয়ে কেটে কেটে বেরিয়ে আসছে— নীরস মৃত দিন, কিন্তু খুব ভদ্র এবং সমান ওজনের। এখানে আমি দলছাড়া এবং এখানকার প্রত্যেক দিন আমার নিজের দিন— নিত্যনিয়মিত-দম-দেওয়া কলের সঙ্গে কোনো যোগ নেই। আমার আপনার মনের ভাবনাগুলি এবং অখণ্ড অবসরটিকে হাতে করে নিয়ে মাঠের মধ্যে বেড়াতে যাই— সময় কিম্বা স্থানের মধ্যে কোনো বাধা নেই। সন্ধেটা জলে স্থলে আকাশে ঘনিয়ে আসতে থাকে— আমি মাথাটা নিচু করে আস্তে আস্তে বেড়াতে থাকি । ) పెపె