পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Se" পতিসর ২৮ মার্চ ১৮৯৪ এ দিকে গরমটাও বেশ পড়েছে, কিন্তু রৌদ্রের উত্তাপটকে আমি বড়ো একটা গ্রাহ করি নে। তপ্ত বাতাস ধুলোবালি খড়কুটে উড়িয়ে নিয়ে তুহু শব্দ করে ছুটেছে ; প্রায়ই হঠাৎ এক-এক জায়গায় একটা আজগবি ঘূর্ণিবাতাস দাড়িয়ে উঠে শুকনো পাতা এবং ধুলোর ওড়ন ঘুরিয়ে ঘুরতে ঘুরতে নেচে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে— সেটা দেখতে বেশ লাগে। নদীর ধারে বাগান থেকে পাখিগুলো ভারী মিষ্টি ক’রে ডাকছে ; মনে হচ্ছে, ঠিক বসন্তই বটে, তপ্ত খোলা থেকে একেবারে গরম গরম নাবিয়ে এনেছে ; কিন্তু গরমটা পরিমাণে কিঞ্চিৎ বেশি, আর-একটুখানি জুড়িয়ে আনলে বিশেষ ক্ষতি ছিল না। আজ সকাল বেলাটায় হঠাৎ দিব্যি ঠাণ্ডা পড়েছিল ; এমন-কি, প্রায় শীতকালেরই মতে, স্নান করবার সময় মনে খুব প্রবল উৎসাহ ছিল না। এই প্রকৃতি-নামক একটা বৃহৎ ব্যাপারের মধ্যে কখন যে কী হচ্ছে তার হিসেব পাওয়া শক্ত ; কোথায় তার কোন অজ্ঞাত কোণে কী একটা কাও ঘটছে আর অকস্মাৎ চার দিকের সমস্ত ভাবখানা বদলে যাচ্ছে। অামি কাল ভাবছিলুম, মানুষের মনখানাও ঠিক ঐ প্রকাণ্ড প্রকৃতির মতে রহস্যময়। চতুর্দিকে শিরা উপশিরা স্বায়ু মস্তিষ্ক মজ্জার ভিতর কীএক অবিশ্রাম ইন্দ্রজাল চলছে; হুহুঃশব্দে রক্তস্রোত ছুটেছে,স্নায়ুগুলো কাপছে, হৃৎপিণ্ড উঠছে পড়ছে, আর এই রহস্যময়ী মানবপ্রকৃতির মধ্যে ঋতুপরিবর্তন হচ্ছে। কোথা থেকে কখন কী হাওয়া আসে আমরা কিছুই জানি নে। আজ মনে করলুম, জীবনটা দিব্যি চালাতে পারব, বেশ বল আছে, সংসারের দুঃখযন্ত্রণাগুলোকে একেবারে ডিঙিয়ে চলে যাব ; এই ভেবে সমস্ত জীবনের প্রোগ্রামটি ছাপিয়ে এনে, শক্ত ক’রে وV ه R