পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> २१ বোলপুর ১৯ অক্টোবর ১৮৯৪ কাল কেবল বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ে একখানি ছোটাে কবিতা লিখেছি এবং একটি তিববতভ্রমণের বই পড়েছি। এরকম জায়গায় নভেল আমি ছুতে পারি নে। এই জনশূন্ত মাঠের মধ্যে, শালবনের বেষ্টনে সমস্ত-দরজা-খোলা জাজিম-পাতা দোতলার একলা ঘরে, পাখিদের করুণকলধ্বনিপূর্ণ স্বপ্নাবেশময় শরৎমধ্যাহ্নে বিলাতি নভেল কোনোমতেই খাপ খায় না। ভ্রমণবৃত্তান্তের একটা মস্ত সুবিধ। এই যে, তার মধ্যে অবিশ্রাম গতি আছে অথচ প্লটের বন্ধন নেই– মনের একটি অবারিত স্বাধীনতা পাওয়া যায়। এখানকার জনহীন মাঠের মাঝখান দিয়ে একটি রাঙা রাস্তা চলে গেছে ; সেই রাস্ত দিয়ে যখন দুই-চার জন লোক কিম্বা দুটো-একটা গোরুর গাড়ি মন্থর গমনে চলতে থাকে, তার বড়ো একটা টান আছে— মাঠ তাতে আরো যেন ধুধু ক’রে ওঠে, মনে হয় এই মানুষগুলো যে কোথায় যাচ্ছে তার যেন কোনো ঠিকানা নেই। ভ্রমণবৃত্তান্তের বইও আমার এই মানসিক নিরালার মধ্যে সেই-রকম একটি গতিপ্রবাহের ক্ষীণ রেখা অঙ্কিত ক’রে দিয়ে চলে যেতে থাকে ; তাতে ক’রে আমার মনের সুবিস্তীর্ণ নিস্তব্ধ নির্জন আকাশটি আরো যেন বেশি ক’রে অনুভব করতে পারি। २¢ रे