পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৮ অক্টোবর ১৮৯৪ এখনো আটটা বাজে নি, তবু মনে হচ্ছে যেন অধরাত্রি। কলকাতার বাড়িতে এখন কে কী করছে কিছুই জানি নে । পৃথিবীতে আমরা যাদের জানি সবাইকেই ফুটকি লাইনে জানি— অর্থাৎ মাঝে মাঝে অনেকখানি ফাক ; সেই ফঁাকগুলো নিজের মনে যেমন তেমন ক’রে ভরিয়ে নিতে হয়। যাদের মনে করি সব চেয়ে ভালো জানি তাদেরও পরিচয়ের সঙ্গে বহুল পরিমাণে নিজের কল্পনা মিশিয়ে নিতে হয়। কত জায়গায় ঐক্যধারা ছিন্ন হয়, পথচিহ্ন লুপ্ত হয়, অনিশ্চিত অস্পষ্ট অন্ধকার থেকে যায়। সুপরিচিত লোকও যদি কল্পনার সূত্রে গাথা ছিন্ন অংশ মাত্র হয় তা হলে কার সঙ্গে, কিসের সঙ্গেই বা, আমার পরিচয় আছে । আমাকেই বা অবিচ্ছিন্ন রেখায় কে জানে। কিন্তু হয়তো বিচ্ছিন্ন ব’লেই, হয়তে। তাদের মধ্যে কল্পনাযোজনার স্থান আছে ব’লেই তারা আমাদের যথার্থ অন্তরঙ্গ । নইলে অপরিচ্ছিন্ন ব্যক্তি হিসাবে বোধ হয় সকলেই অন্তর্যামী ছাড়া আর-সকলের কাছেই তুষ্প্রাপ্য। আমরা নিজেকেও অংশ-অংশ ক’রে জানি– কল্পনা দিয়ে পুরিয়ে নিয়ে একটা স্বরচিত গল্পের নায়ক ক’রে নিই মাত্র। খণ্ড উপকরণ নিয়ে আমরা নিজেকে নিজে স্থষ্টি করে তুলব বলেই বিধাতা এই বিচ্ছেদগুলি রেখে দিয়েছেন । S & Ψ»