পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৯ বোলপুর ৩১ অক্টোবর ১৮৯৪ প্রথম শীতের আরস্তে সমস্ত দিন ধরে যে একটা উত্তরে বাতাস দিতে থাকে সেইটে আজ সকাল থেকে শুরু হয়েছে। বাতাসটা হাঁহী করতে করতে আসছে ; আমার আমলকি-তরুশ্রেণীর পাতাগুলি হলদে হয়ে উঠে কাপতে কঁপিছে ঝরে ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এখানকার বনরাজ্যের মধ্যে যেন খাজনা-আদায়ের পেয়াদা এসেছে— সমস্ত কঁপিছে, ঝরছে এবং দীর্ঘনিশ্বাসে আকুলিত হয়ে উঠছে। দুপুর বেলাকার রৌদ্রক্লান্ত বিশ্রামপুর্ণ বৈরাগ্যে, ঘন আম্রশাখায় ঘুঘুর অবিশ্রাম কুজনে, এই ছায়ালোকখচিত স্বপ্নাতুর প্রহরগুলাকে যেন বিরহবিধুর করে তুলছে। আমার টেবিলের উপরকার ঘড়ির শব্দটাও এই মধ্যাহ্নের মুরের সঙ্গে যেন তাল রেখে চলেছে। ঘরের ভিতরে সমস্ত দুপুর বেলাটা কাঠবিড়ালির ছুটাছুটি চলছে। ফুলে৷ লেজ, কালো এবং ধূসর রেখায় অঙ্কিত রোমশ নরম গা, ছোটাে ছুটি কালো ফোটার মতো ত্বটি চঞ্চল চোখ, নিতান্তই নিরীহ অথচ অত্যন্ত কেজো লোকের মতো ব্যস্ত ভাবটা দেখে আমার বেশ মজা লাগে। এই ঘরের কোণে লোহার জাল দেওয়া অালমারিতে ডাল চাল প্রভৃতি আহার্য সামগ্রী এই-সমস্ত লোভীদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়— ঔৎসুকাব্যগ্র নাসিকাটি নিয়ে তারা সারাদিন এই আলমারিটার চারি দিকে ছিদ্র খুজে খুজে বেড়াচ্ছে। - চারটা কণা যা আলমারির বাইরে বিক্ষিপ্ত থাকে সেইগুলিকে সন্ধান ক’রে নিয়ে সামনের গুটিকয়েক ছোটাে তীক্ষ দন্ত দিয়ে কুটকুট, ক'রে ভারী তৃপ্তির সঙ্গে তারা আহার করে ; মাঝে মাঝে লেজের উপর ভর দিয়ে সোজা হয়ে বসে সামনের দুটি হাত জোড় ক’রে ૨ (t 8