পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

واS O শিলাইদহ ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৫ অদৃষ্টের পরিহাসবশত ফান্ধনের এক মধ্যাহ্নে এই নির্জন অবসরে, এই নিস্তরঙ্গ পদ্মার উপরে, এই নিভৃত নৌকার মধ্যে বসে সমুখে সোনার রৌদ্র এবং সুনীল আকাশ নিয়ে, আমাকে একখানা বইসমালোচনায় প্রবৃত্ত হতে হচ্ছে। সে বইও কেউ পড়বে না, সে সমালোচনাও কেউ মনে রাখবে না ; মাঝের থেকে এমন দিনটা মাটি করতে হবে । জীবনে এমন দিন কটাই বা আসে। অধিকাংশ দিনই ভাঙাচোরা, জোড়াতাড়া ; আজকের দিনটি যেন নদীর উপরে সোনার পদ্মফুলের মতো ফুটে উঠেছে, আমার মনটিকে তার মৰ্মকোষের মধ্যে টেনে নিচ্ছে। আবার হয়েছে কী, একটা হলদেকোমরবন্ধ-পরা স্নিগ্ধ বেগনি রঙের মস্ত ভ্রমর আমার বোটের চার দিকে গুঞ্জনসহকারে চঞ্চল হয়ে বেড়াচ্ছে। বসন্তকালে ভ্রমরগুঞ্জনে বিরহিণীর বিরহবেদন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে, এ কথাটাকে আমি বরাবর পরিহাস ক’রে এসেছি ; কিন্তু ভ্রমরগুঞ্জনের মর্মটা আমি একদিন দুপুর বেলা বোলপুরে প্রথম আবিষ্কার করেছিলুম। সেদিন নিষ্কৰ্মার মতো দক্ষিণের বারান্দায় বেড়াচ্ছিলুম— মধ্যাহ্নটা মাঠের উপর ছড়িয়ে পড়েছিল, গাছের নিবিড় পল্লবগুলির মধ্যে স্তব্ধতা যেন রাশীকৃত হয়ে উঠেছিল। সেই সময়টায় বারান্দার নিকটবর্তী একটা মুকুলিত নিম গাছের কাছে ভ্রমরের অলস গুঞ্জন সমস্ত উদাস মধ্যাহ্নের একটা সুর বেঁধে দিচ্ছিল। সেই দিন বেশ বোঝা গেল মধ্যাহ্নের সমস্ত পাঁচমিশালি শ্রান্তমুরের মূল সুরট হচ্ছে ঐ ভ্রমরের গুঞ্জন— তাতে বিরহিণীর মনটা যে হঠাৎ হাহা ক’রে উঠবে তাতে আশ্চর্য কিছুই নেই। আসল কথাটা হচ্ছে, ঘরের মধ্যে যদি 9\وفا 3