পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

» ©ግ শিলাইদহ ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৫ ‘সাধনা'র জন্তে লিখতে লিখতে অন্যমনস্ক হয়ে যাই ; নৌকা চলে যায়, মুখ তুলে দেখি ; খেয়া পারাপার করে, তাই দেখতে দেখতে সময় কাটে। ডাঙায় আমার বোটের খুব কাছে মন্থরগতি মোষগুলো তাদের বড়ো বড়ো মুখ তৃণগুলোর মধ্যে পুরে দিয়ে, সেগুলো নেড়েচেড়ে নিয়ে, ফোস ফোস নিশ্বাস ফেলে, কচ, কচ, শব্দ করতে করতে খেতে খেতে লেজের ঝাপটায় পিঠের মাছি তাড়াতে তাড়াতে চলতে থাকে ; তার পর একটা অতি দুর্বল উলঙ্গপ্রায় মনুষ্যশাবক এসে এই প্রশান্তপ্রকৃতি প্রকাণ্ড জন্তুটার পিঠে পাচনির গুতো মেরে হঠ, হঠ, শব্দ করতে থাকে, জন্তুটা তার বড়ো বড়ে চোখে এক-এক বার এই ক্ষীণ মানবকটির প্রতি কটাক্ষপাত করে পথের মধ্যে দুই-এক গ্রাস ঘাসপাতা ছিড়ে নিয়ে অব্যাকুলচিত্তে মৃত্যুমন্দ গমনে খানিকটা দূর সরে যায় আর ছেলেট মনে করে তার রাখালি-কর্তব্য সমাধা হল । আমি রাখাল বালকদের মনস্তত্ত্বের এ রহস্যটা এ পর্যন্ত ভেদ ক’রে উঠতে পারলুম না। গরু কিম্বা মোষ যেখানে নিজে ইচ্ছাপূর্বক তৃপ্তভাবে আহার করছে, অকারণে উৎপাত ক’রে সেখান থেকে তাড়িয়ে আর খানিকটা দূরে নিয়ে গিয়ে কী উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় ঠিক জানি নে। পোষ-মানা সবল প্রাণীদের উপর অনাবশ্বক উৎপীড়ন ক’রে প্রভূগর্ব অনুভব করা বোধ করি মানুষের স্বভাব। ঘন সরস তৃণগুল্মের মধ্যে মোষের এই চ’রে খাওয়া আমার দেখতে বড়ো ভালো লাগে। কী কথা বলতে কী কথা উঠল। আমি বলতে যাচ্ছিলুম, আজকাল অতি সামান্ত কারণেই আমার সাধনার তপোভঙ্গ হচ্ছে। পূর্বপত্রে বলেছি, ক’দিন ধরে গোটাকয়েক ভ্রমর శిఆ(t