পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जिजोड़ेलठ् >bb-bア শিলাইদহের অপর পারে একটা চরের সামনে আমাদের বোট লাগানো আছে। প্রকাণ্ড চর— ধু ধূ করছে— কোথাও শেষ দেখা যায় না— কেবল মাঝে মাঝে এক-এক জায়গায় নদীর রেখা দেখা যায়-— আবার অনেক সময়ে বালিকে নদী ব’লে ভ্রম হয়। গ্রাম নেই, লোক নেই, তরু নেই, তৃণ নেই— বৈচিত্র্যের মধ্যে জায়গায় জায়গায় ফাটল-ধর ভিজে কালো মাটি, জায়গায় জায়গায় শুকনো সাদা বালি। পূর্বদিকে মুখ ফিরিয়ে চেয়ে দেখলে দেখা যায় উপরে অনন্ত নীলিমা আর নীচে অনন্ত পাণ্ডুরতা। আকাশ শূন্ত এবং ধরণীও শূন্ত, নীচে দরিদ্র শুষ্ক কঠিন শূন্যতা আর উপরে অশরীর উদার শূন্যতা। এমনতরো desolation কোথাও দেখা যায় না। হঠাৎ পশ্চিমে মুখ ফেরাবামাত্র দেখা যায় স্রোভোহীন ছোটো নদীর কোল, ও পারে উচু পাড়, গাছপালা, কুটার, সন্ধ্যাসূর্যালোকে আশ্চর্য স্বপ্নের মতো। ঠিক যেন এক পারে স্থষ্টি এবং আর-এক পারে প্রলয়। সন্ধ্যাসূর্যালোক বলবার তাৎপর্য এই— সন্ধ্যার সময়ই আমরা বেড়াতে বেরই এবং সেই ছবিটাই মনে অঙ্কিত হয়ে আছে। পৃথিবী যে বাস্তবিক কী আশ্চর্য সুন্দরী তা কলকাতায় থাকলে ভুলে যেতে হয়। এই-যে ছোটাে নদীর ধারে শান্তিময় গাছপালার মধ্যে সূর্য প্রতিদিন অস্ত যাচ্ছে এবং এই অনন্ত ধূসর নির্জন নিঃশব্দ চরের উপরে প্রতি রাত্রে শতসহস্ৰ নক্ষত্রের নিঃশব্দ অভু্যদয় হচ্ছে, জগৎসংসারে এ যে কী একটা আশ্চর্য মহৎ ঘটনা তা এখানে থাকলে তবে বোঝা যায়। সূর্য আস্তে আস্তে ভোরের বেল পুর্বদিক থেকে কী এক প্রকাণ্ড গ্রন্থের পাতা খুলে দিচ্ছে এবং সন্ধ্যায় পশ্চিম থেকে ধীরে ধীরে আকাশের উপরে যে এক প্রকাও ৩২