পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২ জানুয়ারি ১৮৯০ —কাজেই তুফুর বেলা পাগড়ি পরে, কার্ডে নাম লিখে,পালকি চড়ে জমিদারবাবু চললেন। সাহেব তাবুর বারান্দায় বসে বিচার । করছেন, দক্ষিণ পার্শ্বে পুলিসের চর। বিচারপ্রার্থীর দল মাঠে ঘাটে গাছতলায় পড়ে অপেক্ষা ক’রে আছে— একেবারে তার নাকের সামনে পালকি নাবালে, সাহেব খাতির করে চৌকিতে বসালেন। ছোক্রা-হেন, গোফের রেখা উঠছে— চুল খুব কটা, মাঝে মাঝে একটু একটু কালো চুলের তালি দেওয়া— হঠাৎ মনে হয় বুড়ে মানুষ, অথচ মুখ নিতান্ত কঁাচা। সাহেবকে বললুম, কাল রাত্রে আমার সঙ্গে খেতে এসো। তিনি বললেন, আমি আজই আর-এক জায়গায় যাচ্ছি, pig-sticking’এর জোগাড় করতে । বাড়ি চলে এলুম। ভয়ানক মেঘ ক’রে এল, ঘোরতর ঝড়, মুষলধারে বৃষ্টি। বই ছুতে ইচ্ছে করছে না, কিছু লেখা অসম্ভব— মনের মধ্যে যাকে কবিত্বের ভাষায় বলে, কী যেন কী ইত্যাদি। এ ঘর থেকে ও ঘরে পায়চারি করে বেড়াতে লাগলুম। অন্ধকার হয়ে এসেছে— গড়গড় শব্দে মেঘ ডাকছে, বিদ্যুতের উপর বিদ্যুৎ— হু হু ক’রে এক-একটা বাতাসের দমকা আসছে আর আমাদের বারান্দার সামনের বড়ো নিচুগাছটার ঘাড় ধরে যেন তার দাড়িসুদ্ধ মাথাটা নাড়িয়ে দিচ্ছে। দেখতে দেখতে বৃষ্টির জলে আমাদের শুকনো খালটা প্রায় পুরে এল। এই রকম ক’রে বেড়াতে বেড়াতে হঠাৎ আমার মনে হল, ম্যাজিষ্ট্রেটকে এই বাদলায় আমাদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে অনুরোধ করা আমার কর্তব্য। চিঠি লিখে দিলুম। চিঠি পাঠিয়ে দিয়ে ঘর তদারক করতে গিয়ে দেখি, সে ঘরে VOGN