পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বহু দূরে গিয়ে হাতের উপর মাথা রেখে তৃণশয্যায় শুয়ে পড়ল ; ভাবে এই রকম জানালে— এই পাষাণহৃদয় জগৎসংসারের সঙ্গে সে আর কোনো সম্পর্ক রাখবে না, কেবল একলা চীত হয়ে শুয়ে আকাশের তারা গণনা করবে, মেঘের খেলা দেখে হাতে মাথা রেখে জীবন কাটিয়ে দেবে এবং ‘যাবত জীবন রবে কারও সঙ্গে খেলিব না । তার এইরকম অকালে পরম বৈরাগ্য দেখে বড়ো ছেলেটা তাড়াতাড়ি ছুটে গিয়ে কোলের উপর তার মাথাটা নিয়ে সামুনয় স্বরে অনুতাপ প্রকাশ করে বলতে লাগল, ‘আয়-না ভাই, ওঠ-না ভাই, লেগেছে ভাই! অনতিকাল পরেই দুই কুকুরশাবকের মতো ঘঙ্গনের হাত-কাড়াকড়ি খেলা বেধে গেল— এবং হু মিনিট না যেতে যেতে দেখি সেই ছেলে ফের তুলতে আরম্ভ করেছে। এমনি মানুষের প্রতিজ্ঞা ! এমনি তার মনের বল | এমনি তার বুদ্ধির স্থিরতা ! খেলা ছেড়ে একবার দূরে গিয়ে চীত হয়ে শোয়, আবার ধরা দিয়ে হেসে হেসে মোহদোলায় তুলতে থাকে। এ মানুষের মুক্তি কী ক’রে হবে! এমন কজন ছেলে আছে যে খেলাঘর ছেড়ে মাথায় হাত দিয়ে কেবল চীত হয়ে পড়ে থাকে— সেই-সব ভালো ছেলেদের জন্যে গোলকধামে বাসা তৈরি হচ্ছে । ס\ף