পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১ কটকাভিমুখ জলপথে অগস্ট ১৮৯১ পরিধেয় বস্ত্র প্রতিদিন মলিন এবং অসহ্য হয়ে আসছে অথচ কাপড়ের ব্যাগটি নেই, এ কথা চিত্তের মধ্যে অহৰ্নিশি জগন্ধক থাকলে ভদ্রলোকের আত্মসন্ত্রম দূর হয়ে যায়। সেই ব্যাগটা থাকলে যেরকম উন্নতমস্তকে সতেজে জনসমাজে বিচরণ করতে পারতুম, এখন আর তা পারছি নে। কোনোমতে নিজেকে প্রচ্ছন্ন এবং সাধারণের দৃষ্টিঅন্তরালে রাখতে ইচ্ছে করছে। এই কাপড় পরেই রাত্রে শয়ন করছি এবং প্রাতঃকালে প্রকাশিত হচ্ছি। স্টিমারে আবার সর্বত্রই কয়লার গুড়ে এবং মলিনতা, মধ্যাহ্নের অসহ উত্তাপে সর্বশরীর বাষ্পাকুল হয়ে উঠছে। তা ছাড়া স্টিমারে যে সুখে আছি সে কথা লিখে আর কী করব। কত রকমের যে সঙ্গী জুটেছে তার আর সংখ্যা নেই। অঘোরবাবু ব’লে একটি কে এসেছে, সে পৃথিবীর সমস্ত জড় এবং চেতন পদার্থকে মামাশ্বশুরের ভাগ নে ব’লে উল্লেখ করছে। আরএকটি সংগীতকুশল লোক অর্ধেক রাত্ৰে ভৈরো আলাপ করতে লাগল। বিবিধ কারণে সেটা নিতান্ত অসাময়িক ব’লে বোধ হতে লাগল। একটা মুড়ি খালের মধ্যে জাহাজ আটকে কাল বিকেল থেকে আজ ন’টা পর্যন্ত যাপন করা গেছে। সমস্ত যাত্রীর ভিড়ের মধ্যে ডেকের এক ধারে নির্জীব এবং বিমর্ষ ভাবে শুয়ে ছিলুম। খানসামাজিকে বলেছিলুম রাতে লুচি করতে; সে কতকগুলি আকারপ্রকারহীন ভাজা ময়দা তৈরি করে এনেছিল, তার সঙ্গে ছোক কিম্বা ভাজাভুজির উপলক্ষ্য মাত্র ছিল না। দেখে আমি কিঞ্চিৎ বিস্ময় এবং আক্ষেপ প্রকাশ করলুম। সে ব্যক্তি তটস্থ হয়ে বললে, হম আবি বনা দেতা। রাত্রের আধিক্য দেখে আমি তাতে অসম্মত হয়ে যথাসাধ্য শুষ্ক bre