শিলাইদহ,
৪ঠা আষাঢ়,
১৮৯২আজকাল আমি বিকেলে সন্ধ্যার দিকে ডাঙায় উঠে অনেকক্ষণ বেড়াতে থাকি—পূর্ব্বদিকে যখন ফিরি একরকম দৃশ্য দেখ্তে পাই পশ্চিমে যখন ফিরি আরএকরকম দেখ্তে পাই—আকাশ থেকে আমার মাথার উপরে যেন সান্ত্বনা বৃষ্টি হতে থাকে—আমার দুই মুগ্ধ চোখের ভিতর দিয়ে যেন একটি স্বর্ণময় মঙ্গলের ধারা আমার অন্তরের মধ্যে প্রবেশ করতে থাকে। এই বাতাসে আকাশে এবং আলোকে প্রতিক্ষণে আমার মন ছেয়ে যেন নতুন পাতা গজিয়ে উঠ্চে—আমি নতুন প্রাণ এবং বলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠ্চি। সংসারের সমস্ত কাজ করা এবং লোকের সঙ্গে ব্যবহার করা আমার পক্ষে ভারি সহজ হয়ে পড়েচে। আসলে সবই সোজা—একটিমাত্র সিধে রাস্তা আছে। চোখ চেয়ে সেই রাস্তা ধরে গেলেই হল, নানারকম বুদ্ধিপূর্ব্বক short cut খোঁজবার দরকার দেখিনে—সুখ দুঃখ সকল রাস্তাতেই আছে কোন রাস্তা দিয়েই তাদের এড়িয়ে যাবার যো নেই, কিন্তু শান্তি কেবল এই বড় রাস্তাতেই আছে।