পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সাজাদপুর,

৩রা জুলাই।

১৮৯২।

 কালরাত্রে আমি বেশ একটা নতুন রকমের স্বপ্ন দেখেছি। যেন কোথায় এক জায়গায় লেপ্টেনাণ্ট গবর্ণর এসেছেন এবং তাঁর অভ্যর্থনা উপলক্ষ্যে উৎসব হচ্চে। অন্যান্য নানারকম আমোদের মধ্যে একটা তাম্বুতে একজন বিখ্যাত বুড়ো গাইয়ে গান গাচ্চে। গাইয়ে একটা বড়রকম ইমনকল্যাণ গাচ্ছিল। গাইতে গাইতে হঠাৎ এক জায়গায় সে ভুলে গেল। দুবার সেটা ফিরে ফিরে মনে করবার চেষ্টা করলে—তারপর তৃতীয় বারের বার নিরাশ হয়ে গানের কথাগুলো ছেড়ে দিয়ে অমনি কেবল সুরটা ভেঁজে যেতে যেতে হঠাৎ সেই সুরটা কেমন করে কান্নায় পরিবর্ত্তিত হয়ে গেল—সবাই মনে করছিল সে গান গাচ্চে, হঠাৎ দেখে সে কান্না। তার কান্না শুনে বড়দাদা “আহা আহা” করে উঠ্লেন। একজন প্রকৃত গুণীর মনে এরকম ঘটনায় কতখানি আঘাত লাগ্তে পারে তিনি যেন সেটা পরিষ্কার বুঝতে পারলেন। তারপরে নানারকম অসংলগ্ন হিজিবিজি কি হল এবং বাংলা মুল্লুকের লেপ্টনাণ্ট গবর্ণর যে কোথায় ঊড়ে গেলেন তার কিছুই মনে নেই।