পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাইদা, ২১শে জুলাই, >bおえ | কাল বিকেলে শিলাইদহে পৌছেছিলুম আজ সকালে আবার পাবনায় চলেছি। নদীর যে রোধ ! যেন লেজ-দোলানো কেশর-ফোলনে তাজা বুনো ঘোড়ার মত । গতিগৰ্ব্বে ঢেউতুলে ফুলে ফুলে চলেছে—এই খ্যাপী নদীর উপর চড়ে আমরা ছলতে ফুলতে চলেচি । এর মধ্যে ভারি একটা উল্লাস আছে । এই ভরা নদীর যে কলরব সে আর কি বল্ব ! ছলছল খলখল করে কিছুতে যেন আর ক্ষান্ত হতে পারচেন, ভারি একটা যৌবনের মত্ততার ভাব । এ তবু গড়ই নদী—এখান থেকে আবার পদ্মার গিয়ে পড়তে হবে—তার বোধ হয় আর কুলকিনারা দেখবার যে নেই—সে মেরে বোধ হয় একেবারে উন্মাদ হয়ে ক্ষেপে নেচে বেরিয়ে চলেছে, সে আর কিছুর মধ্যেই থাকতে চায় না । তাকে মনে করলে আমার কালীর মূৰ্ত্তি মনে হয়—নৃত্য করচে, ভাঙচে, এবং চুল এলিয়ে দিয়ে ছুটে চলেছে। মাঝিরা বলছিল নুতন বর্ষায় পদ্মার খুব “ধার” হয়েছে। ধার কথাটা ঠিক । তীব্রস্রোত যেন চকচকে খঙ্গের মত— পাৎলা ইস্পাতের মত একেবারে কেটে চলে যায়—প্রাচীন বিটনদের যুদ্ধরথের চাকায় যেমন কুঠার বাধা—দুইধারের তীর একেবারে অবহেলে ছারখার করে দিয়ে চলেচে । কাল যে কাগুটি হয়েছিল সে কিছু গুরুতর বটে। কাল যমরাজের সঙ্গে একরকম হাউ-ডু-ডু করে আসা গেছে। মৃত্যু যে ঠিক আমাদের নেক্স টু-ডোর-নেবার, তা এরকম ঘটনা না হলে সহজে মনে হয় না । হয়েও বড় মনে পড়ে না । কাল চকিতে র মত র্যার আভাস পাওয়া গিয়েছিল আজ তার মূৰ্ত্তিখান কিছুই স্মরণ হচ্চে না । অপ্রিয় অনাবশ্যক বন্ধুর মত একেবারে অনাহূত ঘাড়ে এম্বে না পড়লে তার বিষয়ে আমরা বড় একটা ভাবিনে । যদিও তিনি আড়াল থেকে আমাদের সৰ্ব্বদাই বেঁজ খবর নিয়ে