পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকতা R ৩০ শে এপ্রিল ১৮৯৩ ৷ কাল তাই রাত্রি দশটা পর্যন্ত ছাতে পড়ে থাকতে পেরেছিলুম। চতুর্দশীর চাদ উঠেছিল—চমৎকার হাওয়া দিচ্ছিল—ছাতে আর কেউ ছিলনা। আমি একলা পড়ে পড়ে আমার সমস্ত জীবনের কথা ভাবছিলুম। এই তেতালার ছাত, এইরকম জ্যোৎস্না, এইরকম দক্ষিণের বাতাস জীবনের স্মৃতিতে কতরকমে মিশ্রিত হয়ে আছে। দক্ষিণের বাগানের শিমুগাছের পাতা ঝরঝর শব্দ করছিল, আমি অৰ্দ্ধেক চোখ বুজে আমার ছেলেবেলাকার মনের ভাবগুলিকে মনে আনবার চেষ্টা করছিলুম। পুরোণে স্মৃতিগুলো । মদের মত ;—যত বেশিদিন মনের মধ্যে সঞ্চিত হয়ে থাকে, ততই তার-বর্ণ এবং স্বাদ এবং নেশা যেন মধুর হয়ে আসে। আমাদের এই স্মৃতির বোতলগুলি বুড়ে বয়সের ETIJ “In the deep-delved earth” fel FCH GIỮo (FST TIEG–STR বোধ হয় ছাতের উপর জ্যোৎস্ন রাত্রে এক এক ফোটা করে আস্বাদ করতে বেশ লাগবে । অল্প বয়সে মানুষ কেবলমাত্র কল্পনা এবং স্মৃতিতে সস্তুষ্ট থাকে না, কেননা তখন তার রক্তের জোর তার শরীরের তেজ তাকে কিছু একটা কাজে প্রবৃত্ত করতে চায় কিন্তু বুড়ে বয়সে যখন স্বভাবতই আমরা কাজে অক্ষম, শরীরের যৌবনের অতিরিক্ত তেজ আমাদের কোনরকম তাড়ন করচেন, তখন স্মৃতি বোধ হয় আমাদের ৈ পক্ষে যথেষ্ট্র—তখন জ্যোৎস্ন রাত্রের স্থির জলাশয়ের মত আমাদের অচঞ্চল মনে পূৰ্ব্ব । স্থতির ছায়। এমনি পরিষ্কার স্পষ্টভাবে পড়ে, যে বর্তমান ব্যাপারের সঙ্গে তার প্রভেদ বোঝা শক্ত ।