পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১৪৯ ) কিন্তু সেটা সম্বন্ধে কোনো আপত্তি যদি না করা যায় তাহলে, জগতে দুঃখ রইল কেন এ নালিশ উত্থাপন করা মিথ্য । সেইজন্তে বৌদ্ধের একেবারে গোড়া ঘেষে কোপ মারতে চায় ; তারা বলে যতক্ষণ অস্তিত্ব আছে ততক্ষণ দুঃখের সংশোধন হতে পারে না একেবারে নির্বাণ চাই । খৃষ্টানরা বলে দুঃখটা খুব উচ্চ জিনিষ, ঈশ্বর স্বয়ং মানুষ হয়ে আমাদের জন্যে দুঃখ বহন করচেন । কিন্তু নৈতিক দুঃখ এক, আর পাকা ধান ডুবে যাওয়ার দুঃখ আর । আমি বলি যা হয়েছে বেশ হয়েচে ; এই যে আমি হয়েছি এবং এই আশ্চৰ্য্য জগৎ হয়েছে বড় তোফা হয়েছে—এমন জিনিষটা নষ্ট না হলেই ভাল। বুদ্ধদেব তদুত্তরে বলেন, এ জিনিষটা যদি রক্ষা করতে চাও তাহলে দুঃখ সইতে হবে—আমি নরাধম তদুত্তরে বলি ভাল জিনিষ এবং প্রিয় জিনিষ রক্ষা করতে যদি ঃখ সইতে হয় তাহলে দুঃখ সব—তা আমি থাকি আর আমার জগৎটি থাকুক ; ৷ মাঝে মাঝে অন্নবস্ত্রের কষ্ট, মনঃক্ষোভ, নৈরাশ্ব বহন করতে হবে, কিন্তু সে দুঃখের চেয়ে যখন অস্তিত্ব ভালবাসি এবং অস্তিত্বের জন্যই সে দুঃখ বহন করি তখন ত আর কোনো কথা বলা শোভা পায় না ।