পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পতিসার, ২৬শে শ্রাবণ, ১৩৯৩ ! আমি অনেকদিন থেকে ভেবে দেখেছি পুরুষরা কিছু খাপছাড়া আর মেয়ের বেশ সুসম্পূর্ণ। মেয়েদের কথাবার্তা বেশভুষা, চালচলন, আচারব্যবহার এবং জীবনের কৰ্ত্তব্যের মধ্যে একটি অখণ্ড সামঞ্জস্য আছে। তার প্রধান কারণ হচ্চে যুগযুগান্তর থেকে প্রকৃতি তাদের কৰ্ত্তব্য নিজে নির্দিষ্ট করে দিয়ে তাদের আগাগোড়া সেই ভাবে সেই উদ্দেশ্বে গঠিত করে দিয়েছে। এ পর্য্যন্ত কোনো পরিবর্তন কোনো রাষ্ট্রবিপ্লব সভ্যতার কোনো ভাঙন-গড়নে তাদের সেই ঐক্য থেকে বিক্ষিপ্ত করে দেয়নি—তার। বরাবর সেবা করেছে, ভাল বেসেছে, আদর করেছে, আর কিছু করেনি । তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ভাষায় ভঙ্গীতে সেই কাজের নৈপুণ্য এবং সৌন্দৰ্য্য যেন মিশে এক হয়ে গেছে— তাদের স্বভাব এবং তাদের কাজ যেন পুষ্প এবং পুষ্পের গন্ধের মত সন্মিলিত হয়ে গেছে —তাদের মধ্যে সেই জন্যে কোনো বিরোধ কোনো ইতস্ততঃ নেই। পুরুষের চরিত্রের মধ্যে বিস্তর উচু নীচু, তারা যে নানাকার্য্যে নানাশক্তি নানাপরিবর্তনের ভিতর দিয়ে তৈরি হয়ে এসেছে তাদের অঙ্গে এবং স্বভাবে তার যেন চিকু রয়ে গেছে। কোথাও কিছু নেই কপালটা হয়ত বৃহৎ উচু হয়ে উঠল, মাঝের থেকে হয়ত নাকট। এমনি ঠেলে উঠল যে, তাকে কার সাধ্য দাবিয়ে রাখে–চোয়াল দুটো হয়ত সুষমার কোনো নিয়ম মানলেন । যদি চিরকাল পুরুষ একভাবে চালিত, এককার্য্যে শিক্ষিত হয়ে আস্ত তা হলে তাদেরও মুখে এবং স্বভাবে একটা সামঞ্জস্য দাড়িয়ে যেত ; একটা ছাঁচ বহুকাল থেকে তৈরি হয়ে যেত ; —তাহলে তাদের আর বল প্রকাশ করে বহুচিস্তা করে কাজ করতে হত না, সকল কাজ সুন্দরভাবে সহজে সম্পন্ন হত ; তাহলে তাদের একটা সহজ নীতিও দাড়িয়ে যেত—অর্থাৎ বহুযুগ থেকে অবিচ্ছেদে যে কাজ করে আসচে সেই কাজের কাছে তাদের মন বশ মানত, সেই বহুযুগের অভ্যস্ত কৰ্ত্তব্য থেকে কোনো সামান্য শক্তি তাদের বিক্ষিপ্ত করতে পারত না । স্ত্রীলোককে প্রকৃতি মা