পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( २२ ) ন—র যা মত দাড়িয়েচে তা ঠিক । যাক, তার পরে আমি আর একটা গাড়িতে গিয়ে শুলুম । সে গাড়িতে আর ছুটি বাঙালী ছিলেন । তারা ঢাকা থেকে আসচেন—তাদের মধ্যে একজনের মাথা টাকে প্রায় পরিপূর্ণ এবং ভাষা অত্যন্ত বাকী—তিনি আমাকে জিজ্ঞাস করলেন “আপনার পিতা দীরজিলিঙ্গে ছিল ?” লক্ষ্মী থাকলে এর যথোচিত উত্তর দিতে পারত—সে হয় ত বলত “তিনি দারজিলিঙ্গে ছিল কিন্তু তখন দীরজিলিং বড় ঠাণ্ড ছিলেন বলে তিনি বাড়ি ফিরে গেছে ।” আমার উপস্থিতমত এক রকম বাংলা যোগাল না । 米 球员 榭 肇 米 擊 সিলিগুড়ি থেকে দারজিলিং পৰ্য্যন্ত ক্রমাগত স—র উচ্ছাস উক্তি। “ও মা” “কি চমৎকার” “কি আশ্চৰ্য্য” “কি সুন্দর”—কেবলি আমাকে ঠেলে আর বলে “র—দেখ দেখ” । কি করি, যা দেখায় তা দেখতেই হয়—কখন বা গাছ, কখন বা মেঘ, কখন বা একট। দুর্জয় খাদ নাকওয়ালী পাহাড়ী মেয়ে—কখন বা এমন কত কি, যা দেখতে না দেখতেই গাড়ি চলে যাচ্ছে, এবং স—দুঃখ কচ্চে যে র—দেখতে পেলে না। গাড়ি চলুতে লাগল। ক্রমে ঠাণ্ডা, তার পরে মেঘ, তার পরে সর্দি, তার পরে হাচি, তার পরে শাল, কম্বল, বালাপোষ, মোটা মোজা, পা কন কন, হাত ঠাণ্ড, মুখ নীল, গলা ভার-ভার এবং ঠিক তার পরেই দারজিলিং । আবার সেই বাক্স, সেই ব্যাগ, সেই বিছানা, সেই পুটুলি, মোটের উপর মোট, মুটের উপর মুটে । ব্রেক থেকে জিনিষ পত্র দেখে নেওয়া, চিনে নেওয়া, মুটের মাথায় চাপান, সাহেবকে রসিদ দেখান, সাহেবের তর্ক বিতর্ক, জিনিষ খুজে না পাওয়া এবং সেই হারান জিনিষ পুনরুদ্ধারের জন্য বিবিধ বন্দোবস্ত করা, এতে আমার ঘণ্ট। দুয়েক লেগেছিল ।