পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ts ) গেল। বেরিয়ে এসে মনে করলুম ঈশ্বরের নাম করে তাদের ভৎসনা করব—কিন্তু বুক ফেটে যেতে লাগল তবু গলা দিয়ে কথা বেরোল না। তারপর কখন জেগে উঠলুম ঠিক মনে পড়চেন । ভারি অদ্ভূত স্বপ্ন না ? সমস্ত কলকাতাসহরে সয়তানের প্রাদুর্ভাব ; সবাই তার সাহায্যে বেড়ে ওঠবার চেষ্টা করচে, একটা অন্ধকার নারকী কুজবটিকার মধ্যে সমস্ত সহরের ভয়ঙ্কর শ্ৰীবৃদ্ধি হচ্চে । কিন্তু ওর মধ্যে একটু পরিহাসও ছিল—এত দেশ থাকৃতে জেমৃয়িট্টদের ইস্কুলটার উপরেই সয়তানের এত অনুগ্রহ কেন ?

  • * তারপরে এখানকার স্কুলের মাষ্টারের দর্শনাভিলাষী হয়ে এসে উপস্থিত । র্তারা কিছুতেই উঠতে চান না, অথচ আমার আবার তেমন কথা জোগায় না—পাচ মিনিট অন্তর দুইএক কথা জিজ্ঞাসা করি ; তার একআধট উত্তর পাই, তার পরে বোকার মত বসে থাকি, কলম নাড়ি, মাথা চুলকোই—জিজ্ঞাসা করি এবার এখানে শস্ত কি রকম হয়েছে—স্কুলমাষ্টাররা শস্তসম্বন্ধে কিছুই জানেন না—ছাত্রসম্বন্ধে য কিছু জ্ঞাতব্য বিষয় তা আরম্ভেই হয়েগেছে; ফের আবার গোড়ার কথা পাড়লুম, জিজ্ঞাসা করলুম আপনাদের স্কুলে কজন ছাত্র ? একজন বল্লেন আশি জন, আর একজন বল্লেন না একশ পচাত্তর জন । মনে করলুম দুজনের মধ্যে খুব একটা তর্ক বেধে যাবে, কিন্তু দেখুলুম, তৎক্ষণাৎ মতের ঐক্য হয়ে গেল । তারপরে দেড় ঘণ্টা পরে কেন যে তাদের মনে পড়ল আজ তবে আসি তা ঠিক বোঝা শক্ত—আর এক ঘণ্টা পূৰ্ব্বেও মনে হতে পারত, আর বারো ঘণ্টা পরেও মনে হতে পারত। দেখা যাচ্চে এর ভিতরে কোন একটা নিয়ম নেই, অন্ধ দৈবঘটনা মাত্র ।