পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( و مه ) এইখানে পান্ধী নৌকোকরে পারকরতে হবে কিন্তু এখনো নেীকে এসে পৌঁছয়নি, অবিলম্বে এল বলে—অতএব খানিকক্ষণ এইখানে পান্ধী রাখতে হবে । পান্ধী রাখলে । তারপরে নৌকে আর কিছুতে এসেপৌছয়ন । আস্তে মাস্তে মশালটা নিবে গেল । সেই অন্ধকার নদীতীরে বরকন্দাজগুলো ভাঙাগলায় উৰ্দ্ধশ্বাসে নৌকোওয়ালাকে ডাকতেলাগল—নদীর পরপরথেকে তার প্রনিধ্বনি ফিরে আসতেলাগল কিন্তু কোনো নেীকোওয়াল সাড়াদিলে না । “মুকুন্দো—ও-ও-ও” “বালকৃষ্ণ—অ-অ-অ” “নীলকণ্ঠ— অ-অ-অ’ । এমন কাতরস্বরে আহবান করলে গোলোকধাম থেকে মুকুন্দ এবং কৈলাসশিখর থেকে নীলকণ্ঠ নেমে আসতেন—কিন্তু কর্ণধার কর্ণরোধকরে অবিচলিতভাবে নিজ নিকেতনে বিশ্রাম করতেলাগ ল । নির্জন নদীতীরে একটি কুড়েঘরমাত্রও নেই ; কেবল পথপাশ্বে চালকহীন বাহনহীন একটি শূন্ত গরুর গাড়ি পড়েরয়েছে—আমাদের বেহারাগুলো তারি উপর চেপেবসে বিজাতীয় ভাষায় কলরব করতে লাগল । মক্‌মক শব্দে ব্যাং ডাকচে এবং বিঝির ডাকে সমস্ত রাত্রি পরিপূর্ণ হয়েউঠেচে । আমি মনেকরলুম এইখানেই পান্ধীর মধ্যে বেঁকেচুরে ঘুম ড়ে আজ রাতটা কাটাতেহবে— মুকুন্দ এবং নীলকণ্ঠ বোধহয় কাল প্রভাতে এসে উপস্থিতহতেও পারে—মনেমনে গাইতেলাগ্লুম—ওগো ওগো, যদি নিশিশেষে আসে হেসে হেসে মোর হাসি আর রবে কি ! এই, জাগরণে ক্ষীণ বদন মলিন আমারে হেরিয়া কবে কি ! যাই হোক না কেন, যদি কয় ত উড়ে ভাষায় কবে, আমি কিছুই বুঝতেপারবন কিন্তু মুখে যে আমার হাসি থাকবে না সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। অনেকক্ষণ এই ভাবে কেটেগেল। এমন সময় হু’ই হাই হু’ই হাই শব্দে বরদার পান্ধী এসে উপস্থিতহল । বরদা নৌকে আসবার সম্ভাবনা না দেখে হুকুম দিলেন পান্ধী মাথায় করে নদী পার করতেহবে । শুনে বেহারারা অনেক ইতস্তত করতে লাগল এবং আমার মনেও দয়া এবং কিঞ্চিৎ দ্বিধা উপস্থিত হতেলাগল। যাহোক অনেক বাকবিতণ্ডার পর তার হরিনাম উচ্চারণ করতে করতে পান্ধী মাথায় করে নদীর মধ্যে নাবলে । বহুকষ্ট্রে নদী পারহল । তখন রাত সাড়ে দশটা ৷ আমি কোনরকম গুটিমুটি মেরে শুয়ে