পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
(৮৩)

সে বাহুবন্ধনে আলিঙ্গন করে আছে, পৃথিবী তার অন্তরের গভীর রহস্য বুঝতে পারে না; সে নিজে শস্য উৎপাদন করে না কিন্তু ভিতরে ভিতরে সে না থাক্‌লে পৃথিবীতে একটি ঘাসও গজাতে পারত না। মেয়েকে পুরুষের সঙ্গে তুলনা করে টেনিসন্‌ বলেচেন, Water unto wine—আমার আজকার মনে হচ্চে জল unto স্থল। তাইজন্যে মেয়েতে ও জলেতে বেশ মিশখায়—অন্য অনেকরকম ভারবহন মেয়েকে শোভা পায় না, কিন্তু উৎসথেকে কুয়োথেকে ঘাটথেকে জল তুলে নিয়েযাওয়া কোনকালেই মেয়েদের পক্ষে অসঙ্গত মনে হয় না। গা ধোয় স্নানকরা, পুকুরের ঘাটে এককোমর জলে বসে পরস্পর গল্পকরা, এসমস্ত মেয়েদের পক্ষে কেমন শোভন। আমি দেখেছি মেয়েরা জল ভালবাসে কেননা উভয়ে স্বজাত। অবিশ্রাম সহজপ্রবাহ এবং কলধ্বনি জল এবং মেয়ে ছাড়া আর কারো নেই। ইচ্ছে করলে আরো অনেক সাদৃশ্য দেখান যেতে পারত, কিন্তু বেলাও বোধকরি অনেক হয়েচে, এবং একটা কথা ফেনিয়ে বেশি নেংড়ানো কিছু নয়।