পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষড়বিংশ পরিচ্ছেদ
১১৯

থাকিয়া সুশীলাকে দেখার ইচ্ছা দমন করা দুঃসাধ্য। কিছু দিন পরে যখন যামিনী কানপুরে গিয়া প্রমোদের সহিত নীরজার বিবাহপ্রস্তাব করিলেন, তখন দয়ানন্দ মহাহ্লাদ সহকারে এ প্রস্তাবে সম্মত হইয়া লজ্জা সঙ্কোচ সমস্ত ত্যাগ করিয়া এই উপলক্ষে সুশীলার সহিত একবার দেখা করিতে আসিলেন। আসিয়া যাহা দেখিলেন, তাহা দেখিবেন জানিলে হয়তো আসিতেন না।


ষড়বিংশ পরিচ্ছেদ

দ্রুমচ্যুত বল্লরী

 সুশীলার মৃত্যুতে কনকের অত্যন্ত আঘাত লাগিল, আজ তাহার আপনাকে নিতান্তই অনাথিনী বলিয়া মনে হইতে লাগিল। বাল্যকালে মাতাকে হারাইয়া সে সুশীলাকেই মা বলিয়া জানিত। কনককে সুশীলাও মাতার ন্যায়ই ভালবাসিতেন। কনক ভাবিল তাহার আর কেহ নাই, আজ হইতে আর তাহাকে কেহ সেরূপ স্নেহ দিবে না। অপরাধ করিলে স্বভাব শােধরাইবার জন্য, কনকের ভালর জন্য শাস্তি দিয়া,পরে সে নিমিত্ত তাঁহার কত কষ্টই হইত। তাহার উপর যতই রাগ করুন, যতই বিরক্ত হউন, কাতর বিষণ্ণ দেখিলে অবশেষে তাহাকে আদর করিয়া কোলে টানিয়া লইতেন। ছেলেবেলা হইতে কনক সকলকে ভালবাসে, কিন্তু সুশীলা বই আর কাহারো নিকট কনক এরূপ স্নেহাদর পায় নাই। পিতাকে তার বড় স্মরণ হয় না। তথাপি যেটুক মনে আছে, তাহাতে কনকের অপেক্ষা তাহার পিতা প্রমোদকেই অধিক ভালবাসতেন বলিয়া মনে আছে। প্রমােদের জন্য পিতা মাতার নিকট সে বাল্যকালে কত