যে তোর ভাইকে খুন করতে গিয়েছিল, তাকে ভাই তুই ভালবাসলি? তাকে ভালবেসে তুইত সুখী হবিনে।”
নীরজা বালিকা জানে না যে, প্রণয়ের মূল উৎপাটন করিতে গেলেই আরো দৃঢ় হইয়া বসে। নীরজার কথায় কনকের বিষণ্ন মুখমণ্ডল যেন সহসা জ্বলিয়া উঠিগ, অশ্রুবারি শুকাইয়া গেল, কনক ধীর-গম্ভীর ভাবে বলিল—
“হিরণ খারাপ লোক নন, হিরণ কখনও খুন করতে যান নি, এ কথা যে তোমাদের বলেছে সে মিথ্যাবাদী, তাঁকে না জেনে কেন দোষ দাও? তাঁর সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক না থাকলেও একজন সত্যিকার ভাল লোকের মিথ্যা নিন্দা আমি কেমন ক'রে শুনব?”
তখন নীরজা কেবল ঈবং ঘৃণা-ব্যঞ্জক-স্বরে বলিল—“ওঃ এত দূর?”
এই স্থানে তাহাদের কথোপকথন বন্ধ হইল, দুজনের মনের ভাব দুজনে বুঝিয়া দুজনেই নিস্তব্ধ হইয়া গেল। কনক ভাবিয়াছিল, একদিন তাহার মনের কথা মীরজাকে বলিয়া সে একজন ব্যথার ব্যথী পাইবে। কিন্তু আজ বুঝিল সে আশা বৃথা।
ত্রিংশ পরিচ্ছেদ
হৃদয় প্রকাশ
প্রত্যূষে গঙ্গা তীরে সোগানের উপর বসিয়া কনক গুণগুণ করিয়া গান গাহিতেছিল। গান গাওয়া কেমন কনকের অভ্যাস, সে সর্ব্বদাই প্রায় আপন মনে আস্তে আস্তে গান না গাহিয়া থাকিতে পারে না। গাহিতেছিল,