পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চত্রিংশ পরিচ্ছেদ
১৬৭

হইয়া উঠিলেন। কিন্তু এত অধীরতা এত সত্বরতা সমস্তই বৃথা হইল। তাঁহারাও ষ্টেসনে পৌঁছিলেন, কলিকাতামুখা মেলগাড়ীও তাঁহাদের চোখের উপর দিয়া হুস হুস শব্দে চলিতে আরম্ভ করিল। হিরণকুমার হতাশচিত্তে স্তব্ধ ভাবে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াইয়া রহিলেন।



পঞ্চত্রিংশ পরিচ্ছেদ

বেহাত

 ঘণ্টা কয়েক পরে একটা প্যাসেঞ্জার গাড়ী কলিকাতায় যাইবে, সেই গাড়ীতেই যাত্রা করিবেন ভাবিয়া হিরণকুমার ক্ষুণ্ন হতাশচিত্তে ষ্টেষণের বেঞ্চের উপর আসিয়া বসিলেন।

 তখন প্রয়াগ হইতে রাত্রিকালেই উর্দ্ধ নিম্ন উভয় পথগামী মেল যাত্রা করিত। কিছু পূর্ব্বে প্রয়াগের মেলগাড়ী কলিকাতায় গিয়াছে, কিছু পরে কলিকাতার মেলগাড়ী প্রয়াগে আসিয়া লাগিল। গাড়ী প্লাটফর্ম্মে লাগিতেই ষ্টেষণ জনতাকোলাহলে পূর্ণ হইয়া উঠিল, তৃতীয় ক্লাসের কামরা হইতে স-চীৎকারে দলে দলে পিপীলিকা শ্রেণীর মত লোক নামিতে লাগিল। প্রথম দ্বিতীয় ক্লাশ কইতেও অল্পস্বল্প যাত্রী নামিলেন। হিরণকুমার বিষণ্ণচিত্তে অন্য মনে তাহাদের দিকে চাহিয়া দেখিতে দেখিতে ভাবিতে লাগিলেন এখনো এক ঘণ্টাকাল তাঁহাকে ষ্টেষণে অপেক্ষা করিতে হইবে। কিন্তু কি আশ্চর্য্য সহসা যাত্রীদিগের মধ্যে কাহাকে দেখিয়া চমকিত হইলেন, এ যে যামিনীনাথ! যাহার নিকট যাইবার জন্য হিরণকুমার এত ব্যস্ত সে যে স্বয়ং তাহার নিকট আসিয়া হাজির!

 তাঁহার নবভৃত্য রামধন পোর্টম্যাণ্টোটা দক্ষিণ জানুর নীচে রাখিয়া