পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম পরিচ্ছেদ
৪১

মুখ সংলগ্ন করিয়া নদীর দিকে চাহিয়া রহিল। সেই ভয়ানক অবস্থায় কিরূপ প্রচণ্ড ঝটিকা তাহার মনে বহিয়া যাইতেছিল, তাহা বর্ণনাতীত। কি প্রকারে দস্যু-হস্ত হইতে মুক্ত হইতে পারে, ক্রমাগত তাহাই সে ভাবিতে লাগিল কিন্তু কোনও উপায়ই দেখিল না। বুঝিল তাহার আশা নাই, ভরসা নাই, এই দস্যুদের হস্তে একাকী সে অসহায়! তাহার ভাবিতেও আর শক্তি রহিল না। সে তখন সেই নৌকা-গবাক্ষ হইতে নদীতে ঝাঁপ দিবার সঙ্কল্প করিয়া ধীরে ধীরে তাহার উপর উঠিয়া বসিয়া পদদ্বয় নির্গত করিয়া দিল। দুর্ভাগ্যবশতঃ প্রহরী ঘুমায় নাই; সে তাহার অভিসন্ধি বুঝিয়া তৎক্ষণাৎ উঠিয়া গবাক্ষের নিকট হইতে নীরজাকে টানিয়া আনিল। নীরজা দস্যুহস্ত স্পর্শে শিহরিয়া উঠিয়া ছিন্নলতিকার ন্যায় পুনরায় নৌকা মধ্যে লুটাইয়া পড়িল।



নবম পরিচ্ছেদ

দূরে নৌকা

 নিদারুণ যন্ত্রণায় আকুল হইয়া কাঁদিতে কাঁদিতে ক্রমে যখন বালিকা একান্ত ক্লান্ত অবসন্ন হইয়া পড়িল, তখন শোকতাপহারী তন্দ্রা আসিয়া তাহাকে বিশ্রাম প্রদান করিলেন। কিন্তু অল্পক্ষণ পরেই সহসা কাহার কঠিন হস্তস্পর্শে বালিকা চমকিত হইয়া জাগিয়া উঠিল। তথন চারিদিক ঘনঘোর অন্ধকার, কিছুপূর্ব্বে নৌকায় যে আলো জ্বলিতেছিল তাহাও নিভিয়া গিয়াছে, অনবরত দাঁড়ের ঝপ্ ঝপ্ শব্দ