পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
ছিন্নমুকুল

ঈশ্বরের নিকট সে প্রার্থনা করিবে। বার দিন সে কাহারও সহিত কথা কহিতে পারিবে না, আহারের সময় দাস দাসীরা সেই গৃহে খাদ্য দ্রব্য লইয়া আসিবে, রাত্রেও তাহার গৃহে প্রদীপ জ্বলিবে না। এই নিয়মে কনক সেই দিন হইতে বার দিনের জন্য কারারুদ্ধ হইল।

 দাসী বালা বাঁধা দিয়া টাকা আনিয়া দিয়াছে বলিয়া তাহারও শাস্তি হইল, তাহাকে জবাব দিয়া দিলেন। কিন্তু বাঙ্গালী কর্ম্মিষ্ঠা দাসীর অভাবে কিছুদিন বিস্তর অভাব ভোগ কবিবার পর—ভবিষ্যতে গুরুদণ্ডেব ভয় প্রদর্শনে বর্ত্তমান দণ্ডাজ্ঞা প্রত্যাহরণ করিতে বাধ্য হইলেন।


চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ

এই সে

 এ দিকে নালিশে বিচারের দিন উপস্থিত হইল। প্রমোদ যামিনীনাথের সহিত আলিপুরের বিচাবালয়ে যাত্রা করিলেন। আলিপুরে একজন ডিপুটী মাজিষ্ট্রেটের নিকট বিচার হইবে। বিচার আরম্ভ হইল, আসামী ফরিয়াদী সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইল। উভয় পক্ষের উকীল ও সাক্ষীরা যাহা বলিবার বলিতে লাগিল।

 কিন্তু প্রমোদ এখন স্থিরচক্ষু, চিন্তামগ্ন, প্রমোদের কানে সে সকল কথা কিছুই প্রবেশ করিতেছিল না, প্রমোদ বদ্ধদৃষ্টি হইয়া বিচারকের দিকেই চাহিয়াছিলেন, যেন বিচারককে তিনি আগে কোথায় দেখিয়াছেন, যেন সে মুখ তাঁহার পরিচিত অথচ তাঁহাকে চিনিতে পারিতেছেন না। তিনি তখন, পার্শ্বস্থ যামিনীনাথকে বিচারকের নাম জিজ্ঞাসা করিয়া শুনিলেন তাঁহার নাম হিরণকুমার। সহসা বাল্যকালের সেই অপমান-জনক