পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
ছিন্নমুকুল

তাঁহার চেহারা কত পরিবর্ত্তিত হইয়াছে। যাহা হউক, তখনই তো দণ্ডের টাকা দিতে হইবে, অগত্যা তাহা যামিনীর নিকট তাঁহার ধার করিতে হইল। কিন্তু তাহাতে প্রমোদ অত্যন্ত অপমান বোধ করিলেন এবং হিরণের প্রতি তাঁহার বদ্ধমূল ঘৃণা জন্মিল। ক্রুদ্ধ ও অপমানিত চিত্তে মনে মনে হিরণকুমারের শ্রাদ্ধ করিতে করিতে তিনি যামিনীর সহিত তাঁহার বাটী গমন করিলেন; সেখানে অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত মুক্তকণ্ঠে বিচারকের অবিচারের প্রতি বাক্যবাণ বর্ষণ করিয়া যেন কথঞ্চিৎ শান্তি লাভ করিলেন।


পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ

নূতন সন্দেহ

 সেখান হইতে অপরাহ্নে প্রমোদ পদব্রজে আপন বাটী অভিমুখে গমন করিতেছিলেন। সচরাচর ধনাঢ্যসন্তানেরা পদব্রজে চলিতে যেরূপ অপমান মনে করেন, প্রমোদ তাহা করিতেন না। রৌদ্র কিম্বা বৃষ্টিবশতঃ বিশেষ প্রয়োজন না হইলে, সকালে বিকালে কোথাও যাইবার সময় প্রমোদ প্রায়ই পদব্রজে গমন করিতেন, হাঁটিতে তাঁহার বেশ স্ফূর্ত্তি বোধ হইত। এবিষয়ে তিনি কলিকাতার দৃষ্টান্ত অনুকরণ করেন নাই।

 বিচারের ফলাফল জানিতে সমস্ত দিন ঔৎসুক্য থাকা প্রযুক্ত এবং শেষে পরাজিত হইয়া এখন প্রমোদ বেশ একটু অবসন্ন হইয়া পড়িয়াছেন, তাঁহার স্বাভাবিক স্ফূর্ত্তি চিন্তাযুক্ত ম্লানভাবে আচ্ছন্ন। প্রমোদ একাকী একমনে কত কি ভাবিতে ভাবিতে চলিতেছিলেন। মাঝে মাঝে এক একবার সেই বনবালামুর্ত্তি তাঁহার হৃদয়ে চমকিয়া