পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨ ছুটির পড়া ক্ষুদ্র তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হইলেও জগৎ-সংসার যেমন চলিতেছিল তেমনি চলিবে । আর যদিই-ব না চলিত, তবু আমার জিতিবার কোনো সম্ভাবনা দেখিতেছি না ।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “দাদা, তুমি যদি হার তো আমিও ইচ্ছাপূর্বক লক্ষ্যভ্রষ্ট হইব ।” যুবরাজ ইন্দ্রকুমারের হাত ধরিয়া কহিলেন, “না ভাই, ছেলেমামুষি করিয়ো না— ওস্তাদের নাম রক্ষা করিতে হইবে।” রাজধর বিবর্ণ শুষ্ক চিন্তাকুল মুখে চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিলেন । ইশা খা আসিয়া কহিলেন, “যুবরাজ, সময় হইয়াছে, ধনুক গ্রহণ করে৷ ” যুবরাজ দেবতার নাম করিয়া ধনুক গ্রহণ করিলেন। প্রায় হই শত হাত দূরে গোটা পাঁচ-ছয় কলাগাছের গুড়ি একত্র বাধিয়। স্থাপিত হইয়াছে। মাঝে একটা কচুর পাতা চোখের মতো করিয়া বসানো আছে । তাহার ঠিক মাঝখানে চোখের তারার মতো আকারে কালো চিহ্ন অঙ্কিত। সেই চিহ্নই লক্ষ্যস্থল। দশকের অর্ধচক্র আকারে মাঠ ঘিরিয়া দাড়াইয়া আছে– যে দিকে লক্ষ্য স্থাপিত সে দিকে যাওয়া নিষেধ । যুবরাজ ধনুকে বাণ যোজনা করিলেন। লক্ষ্য স্থির করিলেন । বাণ নিক্ষেপ করিলেন । বাণ লক্ষ্যের উপর দিয়া চলিয়া গেল। ইশ। খ। তাহার গোফ-মৃদ্ধ দাড়ি-মৃদ্ধ মুখ বিকৃত করিলেন, পাকা ভুরু কুঞ্চিত করিলেন । কিন্তু কিছু বলিলেন না। ইন্দ্রকুমার বিষন্ন হইয়। এমন ভাব ধারণ করিলেন যেন তাহাকেই লজ্জিত করিবার জন্য দাদ ইচ্ছা করিয়া এই কীর্তিটি করিলেন । অস্থিরভাবে ধনুক নাড়িতে নাড়িতে ইশা খাকে বলিলেন, “দাদা মন দিলেই সমস্ত পারেন, কিন্তু কিছুতেই মন দেন না ।” ইশ খ বিরক্ত হইয়া বলিলেন, “তোমার দাদার বুদ্ধি আর-সকল