পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१8 ছুটির পড়া আলিঙ্গন করিলেন, আনন্দে ইন্দ্রকুমারের চক্ষু ছলছল করিয়া আসিল ; ইশা খাঁ পরম স্নেহে কহিলেন, “পুত্র, আল্লার কৃপায় তুমি দীর্ঘজীবী হইয়া থাকে।” মহারাজা যখন ইন্দ্রকুমারকে পুরস্কার দিবার উদ্যোগ করিতেছেন এমন সময়ে রাজধর গিয়া কহিলেন, “মহারাজ, আপনাদের ভ্রম হইয়াছে। অামার তীর লক্ষ্যভেদ করিয়াছে।” মহারাজ কহিলেন, “কখনোই না।” রাজধর কহিলেন, “মহারাজ, কাছে গিয়া পরীক্ষা করিয়া দেখুন।” সকলে লক্ষ্যের কাছে গেলেন। দেখিলেন, যে তীর মাটিতে বিদ্ধ তাহার ফলায় ইন্দ্রকুমারের নাম খোদিত, আর যে তীর লক্ষ্যে বিদ্ধ তাহাতে রাজধরের নাম খোদিত । রাজধব কহিলেন, “বিচার করুন, মহারাজ।” ইশাখা কহিলেন, “নিশ্চয়ই তৃণ বদল হইয়াছে।” কিন্তু পরীক্ষা করিয়া দেখা গেল, তৃণ বদল হয় নাই। সকলে পরম্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করিতে লাগিলেন। ইশা খ। বলিলেন, “পুনর্বার পরীক্ষা করা হউক।” রাজধর বিষম অভিমান করিয়া কহিলেন, “তাহাতে আমি সম্মত হইতে পারি না। আমার প্রতি এ বড়ো অন্যায় অবিশ্বাস । আমি তো পুরস্কার চাই না, মধ্যমকুমার-বাহাদুরকে পুরস্কার দেওয়া হউক।” বলিয়া পুরস্কারের তলোয়ার ইন্দ্রকুমারের দিকে অগ্রসর করিয়া দিলেন । ইন্দ্রকুমার দারুণ ঘৃণার সহিত বলিয়া উঠিলেন, “ধিক! তোমার হাত হইতে এ পুরস্কার গ্রাহ করে কে। এ তুমি লও।”— বলিয়া তলোয়ারখানা ঝনঝন করিয়া রাজধরের পায়ের কাছে ফেলিয়া দিলেন। রাজধর হাসিয়া নমস্কার করিয়া তাহা তুলিয়া লইলেন। তখন ইন্দ্রকুমার কম্পিতম্বরে পিতাকে কহিলেন, “মহারাজ,