পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬ ছুটির পড়া হইয়াছে ; এখন কোথায় তিনি বাপের ব্যাবসা-বাণিজ্যে সাহায্য করিবেন তাহা নহে— তিনি আপনার ভাবনা লইয়া দিন কাটান, তিনি ধর্মের কথা লইয়াই থাকেন । 鸭 কিন্তু বাপের মন টাকার দিকে, ছেলের মন ধর্মের দিকে— সুতরাং বাপের বিশ্বাস হইল, এ ছেলেটার দ্বারা পৃথিবীর কোনো কাজ হইবে না। ছেলের তুর্দশার কথা ভাবিয়া কালুর রাত্রে ঘুম হইত না । নানকেরও যে রাত্রে ভালো ঘুম হইত তাহা নহে, তাহারও দিনরাত্রি একটা ভাবনা লাগিয়া ছিল । বাবা যদিও বলিতেন ছেলের কিছু হইবে না, কিন্তু পাড়ার লোকেরা তাহা বলিত না । তাহার একটা কারণ বোধ করি এই হইবে যে, নানকের ধর্মে মন থাকাতে পাড়ার লোকের বাণিজ্যব্যাবসার বিশেষ ক্ষতি হয় নাই । কিন্তু বোধ করি তাহারা নানকের চেহারা, নানকের ভাব দেখিয়া আশ্চর্য হইয়াছিল। এমন-কি, নানকের নামে একটা গল্প রাষ্ট্র আছে । গল্পট যে সত্য নয় সে আর কাহাকেও বলিতে হইবে না । তবে লোকে যেরূপ বলে তাহাই লিখিতেছি । একদিন নানক মাঠে গোরু চরাইতে গিয়া গাছের তলায় ঘুমাইয়া পড়িয়াছিলেন ; সূর্য অস্ত যাইবার সময় নানকের মুখে রোদ লাগিতেছিল। শুনা যায় নাকি একটা কালসাপ নানকের মুখের উপর ফণা ধরিয়া রোদ আড়াল করিয়া ছিল । সে দেশের রাজা সে সময়ে পথ দিয়া যাইতেছিলেন– তিনি নাকি স্বচক্ষে এই ঘটনা দেখিয়াছিলেন । কিন্তু আমরা রাজার নিজের মুখে এ কথা শুনি নাই, নানকও কখনো এ গল্প করেন নাই এবং এমন পরোপকারী সাপের কথাও কখনো শুনি নাই— শুনিলেও বড়ো বিশ্বাস হয় না। কালু অনেক ভাবিয়া স্থির করিলেন, নানক যদি নিজের হাতে ব্যাবসা আরম্ভ করেন তবে ক্রমে কাজের লোক হইয়া উঠিতে পারেন । এই ভাবিয়া তিনি নানকের হাতে কিছু টাকা দিলেন ; বলিয়া