পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহসের পুরস্কার নেপোলিয়ন বোনাপার্টির নাম তোমরা সকলে শুনিয়াছ । তিনি একসময়ে ইংরেজের দেশ আক্রমণ করিবেন স্থির করিয়াছিলেন । যখন যুদ্ধের উদ্যোগ চলিতেছে তখন কী গতিকে একজন ইংরেজি জাহাজের গোরা ফরাসি সৈন্যদের কাছে ধরা পড়ে। শত্রুপক্ষের লোক দেখিয়া ফরাসিরা তাহাকে নিজের দেশে ধরিয়া আনিয়া সমুদ্রের ধারে ছাড়িয়া দেয়। সে বেচারা এক এক সমুদ্রের ধারে ঘুরিয়া বেড়াইত। দেশে ফিরিবার জন্য তাহার প্রাণ র্কাদিত । সমুদ্রের পরপারেই তাহার স্বদেশ । সে সমুদ্রও কিছু বেশি বড়ো নয়। এমনকি, এক-একদিন হয়তো মেঘ কাটিয়া গেলে, রোদ উঠিলে, ইংলণ্ডের সাদা সাদা পাহাড়ের রেখা নীল সমুদ্রের উপর মেঘের মতো দেখা যাইত। সে আকাশে চাহিয়া দেখিত, গর্মির দিনে কত ছোটো ছোটো পাখি পাখা তুলিয়া ইংলণ্ডের দিকে উড়িয়া যাইতেছে। একদিন রাত্রে ঝড় হইয়া গেলে পর সকালে উঠিয়া সে দেখে, একটি পিপে সমুদ্রের ঢেউয়ে ডাঙার দিকে ভাসিয়া আসিতেছে। সেই পিপেটি লইয়া সে একটি পাহাড়ের গর্তের মধ্যে লুকাইয়া রাখিল। সমস্ত দিন ধরিয়া বসিয়া বসিয়া সেই পিপেটি ভাঙিয়া সে নৌকা বানাইত । কিন্তু সে গরিব, নৌকা বানাইবার সরঞ্জাম কোথায় পাইবে । সে সেই ভাঙা কাঠের চারি দিকে নরম গাছের ডাল বুনিয়া এক প্রকার নৌকার মতো গড়িয়া তুলিল। দেশের জন্য এমনই তাহার প্রাণ আকুল হইয়াছে যে, সে একবার বিবেচন৷ করিল না যে এ নৌকা সমুদ্রের জলে একদণ্ড টিকিতে পরিবে না। যাহা হউক, সেই নৌকাটি লইয়া যখন সে সমুদ্রে ভাসাইতেছে এমন সময় ফরাসি সৈন্যরা তাহাকে দেখিতে পাইল । ফরাসির