পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বীরজননী ওয়াশিংটনের মাতা গৃহকত্রী ছিলেন ও র্তাহার কর্তৃত্ব গৃহের মধ্যে অক্ষুন্ন অটল ছিল ; গৃহের মধ্যে পরিপাট শৃঙ্খলা বিরাজ করিত। মাতার নিকট শিশুসন্তান যেরূপ প্রশ্রয় পাইয়া থাকে, যেরূপ আবদার পাইয়া থাকে, তাহা ওয়াশিংটন পাইয়াছিলেন– কিন্তু তাহার সহিত সংযম ও আত্মসংবরণেরও শিক্ষা পাইয়াছিলেন । র্তাহার মাতা কোনো বৈধ শৈশবসুলভ আমোদ-আহলাদ হইতে র্তাহাকে বঞ্চিত করিতেন না, কিন্তু কিছুই অতিরিক্ত করিতে দিতেন না। এইরূপে আমেরিকার ভাবী কর্তৃপুরুষ মাতার নিকট আজ্ঞাপালনের শিক্ষা পাইয়া আজ্ঞা দিবার অধিকারের উপযুক্ত হইয়াছিলেন। ওয়াশিংটনের মাতা পুত্রকে যথেষ্ট স্বাধীনতা দিয়াও গুরুজনমুলত কর্তৃত্ব ছাড়েন নাই। এমন-কি, ওয়াশিংটন যখন প্রখ্যাত বড়োলোক হইয়া উঠিলেন তখনো তাহার মাতা নিজ কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করেন নাই । সেই কর্তৃত্ব যেন এইরূপভাবে বলিত— ‘আমি তোমার মাতা, আমি তোমাকে পদচালনা করিতে শিখাইয়াছি— আমার মাতৃস্নেহ তোমার ভালোবাসা আকর্ষণ করিয়াছে, আমার কর্তৃত্ব তোমার উচ্ছৃঙ্খলতা দমন করিয়াছে— এখন তোমার যতই যশ কীর্তি হউক-না কেন, তোমার শ্রদ্ধা ভক্তি আমার প্রতি প্রযোজ্য।’ ওয়াশিংটনও তাহার জীবনের শেষ পর্যন্ত এই কথা রক্ষা করিয়াছিলেন । ওয়াশিংটনের একজন শৈশব-সহচর ওয়াশিংটনের মাতৃগৃহের এইরূপ বর্ণনা করিয়াছেন– “আমি ওয়াশিংটনের সহপাঠী ও খেলার সাখী ছিলাম। আমি ওয়াশিংটনের মাতাকে যেরূপ ভয় করিতাম সেরূপ ভয় আমার নিজের মাতা-পিতাকেও করিতাম না। তিনি খুব দয়ালু ছিলেন। র্তাহার অজস্র দয়ার মধ্যে থাকিয়াও র্তাহাকে দেখিলে