পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুকুট । ●● সেইজন্য বিলম্ব করিতেছেন— কিন্তু তাহারাও নড়িতে চাহে না, স্থির হইয়া আছে । অবশেষে আক্রমণ করাই স্থির হইল । সমস্ত রাত্রি আক্রমণের আয়োজন চলিতে লাগিল । রাজধর প্রস্তাব করিলেন, “দাদা, তোমরা দুইজনে তোমাদের দশ হাজার সৈন্ত লইয়া আক্রমণ করো। আমার পাচ হাজার হাতে থাক, আবশ্বকের সময় কাজে লাগিবে ।” ইন্দ্রকুমার হাসিয়া বলিলেন, “রাজধর তফাতে থাকিতে চান।” যুবরাজ কহিলেন, “না, হাসির কথা নয়। রাজধরের প্রস্তাব আমার ভালো বোধ হইতেছে।” ইশা খাও তাহাই বলিলেন । রাজধরের প্রস্তাব গ্রাহ হইল । যুবরাজ ও ইন্দ্রকুমারের অধীনে দশ হাজার সৈন্য পাচ ভাগে ভাগ করা হইল। প্রত্যেক ভাগে দুই হাজার করিয়া সৈন্য রহিল। স্থির হইল, একেবারে শত্রুবৃহের পাঁচ জায়গায় আক্রমণ করিয়া বুহিভেদ করিবার চেষ্টা করা হইবে । সর্বপ্রথম সারে ধানুকীরা রহিল, তার পরে তলোয়ার বশ প্রভৃতি লইয়া অন্ত পদাতিকের রহিল এবং সর্বশেষে অশ্বারোহীরা সার বাধিয়া চলিল । আরাকানের মগ-সৈন্যেরা দীর্ঘ এক বাশবনের পশ্চাতে ব্যুহ রচনা করিয়াছিল। প্রথম দিনের আক্রমণে কিছুই হইল না। ত্রিপুরার সৈন্য বৃহ ভেদ করিতে পারিল না। সপ্তম পরিচ্ছেদ দ্বিতীয় দিন সমস্তদিন নিস্ফল যুদ্ধ-অবসানে রাত্রি যখন নিশীথ হইল, যখন উভয় পক্ষের সৈন্যেরা বিশ্রামলাভ করিতেছে, দুই পাহাড়ের উপর দুই শিবিরে স্থানে স্থানে কেবল এক-একটা আগুন জ্বলিতেছে, শৃগালের রণক্ষেত্রে ছিন্ন হস্ত পদ ও মৃতদেহের মধ্যে থাকিয়া থাকিয়া দলে দলে কাদিয়া উঠিতেছে— তখন শিবিরের দুই ক্রোশ দূরে রাজধর তাহার পাচ হাজার সৈন্য লইয়া সারবন্দী নৌকা বাধিয়া