পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুকুট Q (t হইয়া পড়িল । কেহ মনে করিল দুঃস্বপ্ন, কেহ মনে করিল প্রেতের উৎপাত, কেহ কিছুই মনে করিতে পারিল না । রাজা বিনা রক্তপাতে বন্দী হইলেন । রাজা বলিলেন, “আমাকে বন্দী করিলে বা বধ করিলে যুদ্ধের অবসান হইবে না। আমি বন্দী হইবামাত্র সৈন্যেরা আমার ভাই হামচুপামুকে রাজা করিবে । যুদ্ধ যেমন চলিতেছিল তেমনি চলিবে । আমি বরঞ্চ পরাজয় স্বীকার করিয়া সন্ধিপত্র লিখিয়া দিই, আমার বন্ধন মোচন করিয়া দিন ।” রাজধর তাহাতেই সম্মত হইলেন । আরাকানরাজ পরাজয় স্বীকার করিয়া সন্ধিপত্র লিখিয়া দিলেন। একটি হস্তিদন্তনির্মিত মুকুট, পাচ শত মণিপুরি ঘোড়া ও তিনটে বড়ো হাতি উপহার দিলেন । এইরূপ নানা ব্যবস্থা করিতে করিতে প্রভাত হইল— বেলা হইয়া গেল । সুদীর্ঘ রাত্রে সমস্তই ভূতের ব্যাপার বলিয়া মনে হইয়াছিল, দিনের বেলা আরাকানের সৈন্তগণ আপনাদের অপমান স্পষ্ট অনুভব করিতে পারিল । চারি দিকে বড়ো বড়ো পাহাড় সূর্যালোকে সহস্রচক্ষু হইয়া তাহাদিগের দিকে তাকাইয়া নিঃশব্দে দাড়াইয়া রহিল । রাজধর আরাকানপতিকে কহিলেন, “আর বিলম্ব নয়, শীঘ্ৰ যুদ্ধ নিবারণ করিবার এক আদেশপত্র আপনার সেনাপতির নিকট পাঠাইয়া দিন। ও পারে এতক্ষণে ঘোর যুদ্ধ বধিয়া গেছে।” কতকগুলি সৈন্যসহিত দূতের হস্তে আদেশপত্র পাঠানো হইল । অষ্টম পরিচ্ছেদ অতি প্রত্যুষেই অন্ধকার দূর হইতে না-হইতেই, যুবরাজ ও ইন্দ্রকুমার তুই ভাগে পশ্চিমে ও পূর্বে মগদিগকে আক্রমণ করিতে চলিয়াছেন। সৈন্তের অল্পতা লইয়া রূপনারায়ণ হাজারি দুঃখ করিতেছিলেন। তিনি বলিতেছিলেন– আর পাচ হাজার লইয়া আসিলেই আর ভাবনা ছিল না। ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “ত্রিপুরারির অনুগ্রহ যদি হয় তবে এই কয়জন সৈন্য লইয়াই জিতিব, আর যদি না হয় তবে বিপদ